২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে নেপালে। ওই বছর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ বছরে যে ১৪টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে কোনোটিই ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
১৯৫১ সালের আগ পর্যন্ত নেপালে সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। নেপালের তৎকালীন রাজাদের বলা হতো রানা। তার সহায়ক হিসেবে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীও থাকতেন, তবে কে প্রধানমন্ত্রী হবে, তা উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হতো।
তারপর ১৯৫১ সালে এক গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনে পতন ঘটে রানাদের। ক্ষমতায় আসেন রাজা মহেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব এবং নেপাল পার্লামেন্টারি রাজনীতিতে প্রবেশ করে।
কিন্তু ১৯৬১ সালে নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষেধাজ্ঞা দেন রাজা মহেন্দ্র। তার এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে এককভাবে রাজতন্ত্রের হাতে কুক্ষিগত করা। তবে পার্লামেন্ট ব্যবস্থা চালু ছিল এবং নির্বাচনের ভিত্তিতেই সেখানে এমপিরা আসন পেতেন। তবে তারা নিজেদের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেন না।
প্রায় ৩ দশক এই অবস্থা চলার পর ১৯৯০ সালে জনগণ বিক্ষোভ শুরু করে এবং তা শান্ত করতে তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব রাজনৈতিক দলগুলোর পর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। সেই বিক্ষোভের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রে প্রবেশ করে নেপাল।
২০০৬ সালে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন নেপালের মাওবাদীরা। রাজতন্ত্র বিলোপ হয়, নেপাল একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১৫ সালে নতুন সংবিধান গ্রহণ করে দেশটি।
কারণ: কেন নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এত বেশি?
জোট–ভিত্তিক সরকার ও ছোট দলগুলোর প্রভাব:
সরকার বানাতে অভিযোজিত ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কিন্তু পরবর্তীতে সহজেই যে কোন সময় অ্যালায়েন্স ভেঙে যায়। এই কারণে প্রচুর পরিবর্তন হয়।
আস্থা ভোট ও বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া:
প্রধানমন্ত্রী আস্থা ভোটে ব্যর্থ হলে দ্রুতই পতন ঘটে। পার্লামেন্টে স্থায়িত্ব থাকে না। ইলেকটোরাল ও সংবিধানিক দুর্বলতা:
নতুন সংবিধান এবং proportional representation প্রণালী তত্ত্বে অনেক এগিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে নীতি নির্ধারণে জটিলতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ আলোচনার সৃষ্টি করা হয়েছে। গণআন্দোলন ও জনরোষ:
সরকারি অবচেতনতা, দুর্নীতি এবং অক্ষমতা নিয়েও সামাজিক প্রতিক্রিয়া যেমন সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা সরকার পতনের কারণ হতে পারে।
জনমধ্যে হতাশা ও ক্ষমতা লোভ:
রাজনৈতিক নেতা বা দল ক্ষমতা ধরে রাখতে শূন্যতার সুযোগ নেন। নির্ভরযোগ্যতা হারাতে থাকে জনগণের।
সারসংক্ষেপ:
তথ্য | বিবরণ |
সময়কাল | ২০০৮–২০২৫ (প্রায় ১৭ বছর) |
সরকারের সংখ্যা | প্রায় ১৩–১৪টি ভিন্ন উত্স ভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করেছে |
স্থায়িত্বের অভাব | কোন সরকারই পুরো ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেনি |
মূল কারণ | জোট ভিত্তিক সরকার, আস্থা ভোটে অমিল, ইলেকটোরাল জটিলতা, জনরোষ, ক্ষমতার লোভ |
Leave a Reply