National Board of Revenue NBR আয়কর রিটার্ন (Income Tax Return ITR / e-Return) সময়মতো না দিলে কি হতে পারে, এবং আপনি এখন রিটার্ন ফাইল করতে ভুলে থাকলে কী করতে পারেন, পেনাল্টি বাঁচানোর উপায় কী বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
কেন সময়মতো ITR ফাইল করা জরুরি:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
- যদি আপনি করদাতা হিসেবে ট্যাক্স-যোগ্য আয় বা বৈধ TIN ধারে থাকেন, তাহলে প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
- যদি রিটার্ন জমা না দেন, তাহলে ভবিষ্যতে ব্যাংক লোন, ব্যবসা-লিজ, সরকারের অনুদান/প্রকল্প, বা অন্যান্য সার্ভিসে সমস্যা হতে পারে; কারণ NBR একটি নিয়ম করে ফেলেছে যাতে রিটার্ন জমার প্রমাণ (return submission proof) কিছু ক্ষেত্রে লাগতে পারে।
দেরিতে/না–দাখিল করার শাস্তিমূলক বিধি:
বর্তমানে আইন ও NBR-এর নিয়ম অনুযায়ী:
- সময়মতো (Tax Day বা শেষ দিন) রিটার্ন না দিলে প্রথমে বিলম্ব সুদ (delay interest) দিতে হবে। ধরা হচ্ছে, পেনাল্টি বা সুদের হার মাসিক। সেই সঙ্গে জরিমানা (penalty) যা হতে পারে “গত বার যা কর ঠেকেছিল তার ১০
- যদি দেরি দীর্ঘ হয়, প্রতিদিনের জন্য অভিযোগাধীন জরিমানা (additional daily penalty) ধার্য হতে পারে। অতীত মূল্যায়ন (assessed previously) হলে জরিমানা বড় হতে পারে।
- শুধু সময়মতো দাখিল না কিন্তু যদি আপনি রিটার্ন দাখিল করেন কিন্তু “জিরো ইনকাম / সম্পদ / দায় দেখিয়ে” (অর্থাৎ, উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যে তথ্য দিয়ে) দাখিল করেন তাহলে সেটি আইন অনুযায়ী অপরাধ। এমন নকল/ভুল রিটার্ন দাখিলের জন্য বড় শাস্তি হতে পারে: সর্বোচ্চ ৫ বছর জেল এবং জরিমা
কীভাবে আবেদন করবেন:
অনলাইন পোর্টালে বর্তমানে এই সুযোগ মিলছে না। তাই আপনাকে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে আপনার এলাকার প্রিন্সিপাল সিআইটি বা প্রিন্সিপাল কমিশনার অফ ইনকাম ট্যাক্সের সঙ্গে। সেখানে ম্যানুয়াল বা হাতে লেখা আবেদন জমা দিতে হবে।
সঙ্গে কী কী নথিপত্র আনতে হবে:
দেরি হওয়ার ‘উপযুক্ত কারণ’ ব্যাখ্যা করে একটি চিঠি লিখতে হবে আপনাকে। এ ছাড়া দিতে হবে আপনার আয়ের সংশোধিত হিসাব। এ ছাড়াও দিতে হবে ফর্ম ২৬এএসের রিকনসিলিয়েশন স্টেটমেন্ট। এ ছাড়াও আপনাকে দিতে হবে আপনার খরচের প্রমাণপত্রও।
প্রিন্সিপাল কমিশনার অফ ইনকাম ট্যাক্স যদি মনে করেন আপনার কারণটি ‘জেনুইন’, তাহলে তিনি একটি অর্ডার ইস্যু করবেন। সেই ইউনিক নম্বরটি দিয়েই আপনি পেনাল্টি ছাড়া রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে রিফান্ড ক্লেম বা লস ক্যারি ফরোয়ার্ড করার সুযোগও বজায় থাকে।
এখনো যদি রিটার্ন জমা না হয়ে থাকে:
যদি আপনি এখনো আপনার ITR জমা না করে থাকেন, তাহলে:
- যত দ্রুত সম্ভব “e-Return” (অথবা NBR-এর অনলাইন/অফলাইন রিটার্ন ফরম) পূরণ করে দাখিল করুন। NBR–র ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য ৩০ নভেম্বর ছিল মূল শেষ সময়, তবে সম্প্রতি এক মাস বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। দেরিতে দাখিল হলেও ফাইল করলেই সম্ভবত দণ্ড বা জরিমানা কম হবে, এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য আইনগত জটিলতা (যেমন সার্ভিস বন্ধ, লোন, ব্যাংকিং ইত্যাদি) এড়ানো যাবে।
- করযোগ্য আয়, উৎস, সম্পদ, দায় (liabilities) সঠিকভাবে দেখান ভুল বা ভূল তথ্য দেবেন না। যেকোনো নকল রিটার্ন আইনত কঠোরভাবে শাস্তিযোগ্য।
- যদি আগে কখনো রিটার্ন দাখিল না করে থাকেন (new taxpayer), অনেকে পেনাল্টি হিসেবে সর্বোচ্চ BDT 5,000 পর্যন্ত জরিমানা পেতে পারেন বলে NBR নিয়মে রয়েছে।
পেনাল্টি কমাতে এবং ঝামেলা এড়াতে:
- দেখুন — আপনার বছরের মোট আয় করযোগ্য কি না। যদি করযোগ্য আয় হয়, তাহলে রিটার্ন দাখিল করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
- দেখবেন — আগের কর (advance tax, source tax deduction) পূর্ণ হয়েছে কি না। যদি বকেয়া থাকে, সঙ্গে দিয়েই রিটার্ন জমা দিন।
- সত্যি তথ্য দিন — আয়, সঞ্চয়, সম্পদ-দায় সব সঠিকভাবে উল্লেখ করুন।
- যদি সম্ভব হয় — একটা পেশাদার CA / ট্যাক্স কনসালট্যান্টের সঙ্গে কথা বলুন। বিশেষ করে যদি আপনার ব্যবসা বা নানা উৎস থেকে আয় থাকে।
- ভবিষ্যতে নিয়মিত ITR জমা দিন যাতে আর দেরি-পেনাল্টি বা ঝামেলার সম্মুখীন হতে না হয়।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply