বিদ্বেষ থেকে এনবিআর ভাগ হলে ভয়ংকর পরিস্থিতির বিস্তারিত কারণ ও প্রভাব:
১. প্রশাসনিক বিভ্রাট ও জটিলতা বৃদ্ধি:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
- বিদ্বেষ ও পারস্পরিক বিরোধের কারণে এনবিআরের বিভিন্ন শাখা বা ইউনিট আলাদা হয়ে গেলে প্রশাসনিক কাজের সামগ্রিক সমন্বয়হীনতা দেখা দেবে।
- কর আদায় ও শুল্ক প্রক্রিয়ায় গরমাগরম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত হবে।
- দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের অস্বচ্ছতা সৃষ্টি হবে, যেখানে কেউ স্পষ্টভাবে দায়িত্ব নেবে না বা দায়িত্বের ওপর অপ্রয়োজনীয় টাকরাপাকড় হবে।
২. রাজস্ব ক্ষতি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি:
- এনবিআর একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। এটি যদি ভাগ হয়ে যায় এবং বিদ্বেষের কারণে অংশগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন হয়, তাহলে কর আদায়ের কার্যকারিতা কমে যাবে।
- সরকার আয় হ্রাসে পড়বে, ফলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অবকাঠামোগত কাজে ব্যাঘাত ঘটবে।
- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ধাক্কা লাগবে, দেশের বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধি পাবে।
৩. দুর্নীতি ও স্বার্থপরতা বৃদ্ধি:
- যখন কোনও প্রতিষ্ঠান বিভক্ত হয়, সেখানে ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ে, যার ফলে দুর্নীতির সুযোগ ও প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
- বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশে বিভিন্ন গ্রুপ নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে, যা নীতিগত দুর্নীতি ও অনিয়মের মাত্রা বাড়াবে।
৪. কর্মীদের মনোবল ও কর্মদক্ষতা হ্রাস:
- বিদ্বেষমূলক বিভাজনের ফলে কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়বে, যার ফলে কর্ম পরিবেশ বিষিয়ে যাবে।
- কর্মীদের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাবে, ফলে তাদের কার্যক্ষমতা কমে যাবে।
- গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি হবে, নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটবে।
৫. করদাতাদের অসন্তোষ ও কর প্রদান কমে যাওয়া:
- এনবিআরের দায়িত্ব বিভক্ত হলে করদাতাদের জন্য নিয়ম-কানুন জটিল ও বিভ্রান্তিকর হবে।
- করদাতারা বিভ্রান্ত হবে, কর আদায়ে অসুবিধা হবে, করদাতাদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।
- কর পরিশোধে অনীহা বাড়বে, অবৈধ বা গোপন উপায়ে রাজস্ব সংগ্রহের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
৬. আন্তর্জাতিক বিশ্বাসহ্রাস ও বিনিয়োগ কমে যাওয়া:
- রাজস্ব প্রশাসনে বিভ্রাট ও দুর্নীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের অর্থনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
- বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে ঝুঁকি দেখবে, দেশের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ হ্রাস পাবে।
- বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দুর্বল হতে পারে।
৭. আইনি ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা:
- বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশে কর ও শুল্ক আইন প্রয়োগে বৈষম্য সৃষ্টি হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
- সামাজিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ, এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়ার আশঙ্কা থাকবে।
- এনবিআরের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি সংস্থা ও জনগণের সম্পর্কও খারাপ হবে।
সামগ্রিক বিশ্লেষণ:
বিদ্বেষ থেকে এনবিআর বিভাজিত হলে শুধু কর আদায় বা রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে সমস্যাই নয়, দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এতে সরকারের নীতি-নির্ধারণ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়বে, জনগণের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply