আফগানিস্তানের পারমাণবিক শক্তিধর ৩ দেশসহ মোট ৪টি প্রতিবেশী দেশের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করছি ভৌগোলিক, রাজনৈতিক ও সামরিক প্রেক্ষাপটে। এতে আপনি প্রতিটি দেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক, সীমান্ত ও পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন: আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের অন্যতম পারমাণবিক শক্তিধর তিন দেশসহ মোট চারটি দেশ: চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তান। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, এই চারটি দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে কোনো সামরিক ঘাঁটি পুনঃস্থাপনের জন্য যেকোনো পদক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের এক বিবৃতিতে জানান, বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে আফগানিস্তান নিয়ে এই চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিনিধিরা একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। মুখপাত্র গুও আরও বলেন, এই বৈঠকটি আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলির সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং জাতীয় মর্যাদার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধার প্রতিফলন।
পাকিস্তান (পারমাণবিক শক্তিধর):
বৈশিষ্ট্য | বিস্তারিত |
সীমান্ত দৈর্ঘ্য | প্রায় ২,৬৭০ কিমি আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সীমান্ত |
সীমান্ত অঞ্চল | ডুরান্ড লাইন (Durand Line) |
পারমাণবিক অস্ত্র | আছে (পরীক্ষা: ১৯৯৮ সালে) |
সামরিক সম্পর্ক | দ্বন্দ্বপূর্ণ, বিশেষত তালেবান ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে |
রাজনৈতিক সম্পর্ক | ইতিহাসে একে অপরকে সমর্থন ও দোষারোপ দুই-ই করেছে |
বিশেষ তথ্য:
পাকিস্তান আফগানিস্তানে তালেবান গোষ্ঠীর উত্থানে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে বলে অনেক বিশ্লেষকের মত। বর্তমানে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ-চলাচল ও সংঘাত প্রায়ই ঘটে।
চীন (পারমাণবিক শক্তিধর):
বৈশিষ্ট্য | বিস্তারিত |
সীমান্ত দৈর্ঘ্য | মাত্র ~৭৬ কিমি (ওয়াখান করিডোর অঞ্চল) |
পারমাণবিক অস্ত্র | আছে (পরীক্ষা: ১৯৬৪ সালে) |
সামরিক সম্পর্ক | শান্তিপূর্ণ তবে সীমিত |
রাজনৈতিক সম্পর্ক | বন্ধুত্বপূর্ণ, চীন তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে |
অর্থনৈতিক আগ্রহ | খনিজ সম্পদ, বিশেষ করে তামা ও লিথিয়াম খনিতে বিনিয়োগে আগ্রহী |
বিশেষ তথ্য:
চীন উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনে তালেবান সরকারের সহায়তা প্রত্যাশা করে। আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদে চীনের গভীর আগ্রহ রয়েছে।
ভারত (পারমাণবিক শক্তিধর):
বৈশিষ্ট্য | বিস্তারিত |
সীমান্ত | সরাসরি সীমানা নেই, তবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর হয়ে ভূ-রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ |
পারমাণবিক অস্ত্র | আছে (পরীক্ষা: ১৯৭৪ সালে) |
সামরিক সম্পর্ক | সীমিত, তালেবান সরকারকে সরাসরি সমর্থন না থাকলেও অতীতে আফগান সরকারকে সাহায্য করেছে |
রাজনৈতিক সম্পর্ক | আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে ভারতের বড় ভূমিকা ছিল |
উল্লেখযোগ্য প্রকল্প | সালমা ড্যাম, জরাঞ্জ–দেলারাম মহাসড়ক (ইরান হয়ে আফগানে প্রবেশ) |
বিশেষ তথ্য:
ভারত আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন প্রকল্পে হাজার কোটি রুপি ব্যয় করেছে। তালেবান শাসন আসার পর কূটনৈতিক উপস্থিতি সীমিত হলেও আবার ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ছে।
ইরান (অপারমাণবিক, তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী):
বৈশিষ্ট্য | বিস্তারিত |
সীমান্ত দৈর্ঘ্য | ~৯২১ কিমি |
পারমাণবিক অস্ত্র | নেই (তবে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ রয়েছে) |
সামরিক সম্পর্ক | মাঝে মাঝে উত্তেজনাপূর্ণ (বিশেষ করে পানি ও সীমান্ত ইস্যুতে) |
রাজনৈতিক সম্পর্ক | একে অপরকে সহনশীলভাবে মোকাবিলা করে |
ধর্মীয়/সাংস্কৃতিক প্রভাব | আফগান শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে |
বিশেষ তথ্য:
ইরান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে হেলমান্দ নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধ হয়েছে।
তুলনামূলক চিত্র:
দেশ | সীমানা আছে? | পারমাণবিক শক্তি | সম্পর্কের ধরন |
পাকিস্তান | ✅ আছে | ✅ আছে | দ্বন্দ্বপূর্ণ, কৌশলগত |
চীন | ✅ আছে (কম) | ✅ আছে | শান্তিপূর্ণ, কৌশলগত |
ভারত | ❌ নেই | ✅ আছে | প্রভাবশালী, বন্ধুত্বপূর্ণ (পূর্ববর্তী সরকারে) |
ইরান | ✅ আছে | ❌ নেই | সহনশীল, মাঝে মাঝে উত্তেজনা |
উপসংহার:
আফগানিস্তানের চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী:
Leave a Reply