বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যদি একজন পিতা তাঁর জীবদ্দশায় সমস্ত সম্পত্তি শুধুমাত্র একজন সন্তানকে লিখে দেন, তাহলে বাকি সন্তানদের আইনি অধিকার এবং করণীয় বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করতে হবে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

 ১. পিতা জীবিত অবস্থায় সম্পত্তি দান করলে (Gift বা Hibah):

নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত

কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী

 ইসলামিক আইন অনুযায়ী (যদি পিতা মুসলিম হন):

• জীবদ্দশায় সম্পত্তি দান করা বৈধ, তবে তা ন্যায়সংগতভাবে হতে হবে।
• হাদীস অনুযায়ী, সন্তানদের মধ্যে সমানভাবে দান করাই ন্যায্য (সুন্নাহ অনুযায়ী)।
• যদি পিতা কেবল একজন সন্তানকে সব দিয়ে দেন এবং অন্যদের বঞ্চিত করেন, তাহলে:
  • শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি অনুচিত বা জুলুম।
  • অন্য সন্তানরা প্রতিবাদ করতে পারেন, তবে আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে হলে প্রমাণ করতে হবে যে এটি অন্যায়ভাবে বা চাপ প্রয়োগ করে আদায় করা হয়েছে।

 সিভিল আইন অনুযায়ী:

• যদি দাননামা বা Hibah আইনানুগভাবে করা হয়ে থাকে (নথিভুক্ত, সাক্ষীসহ), তবে এটি সাধারণত বৈধ।
• তবে যদি এটি প্রতারণা, বলপ্রয়োগ বা মানসিক দুর্বলতার সময় করা হয়, তাহলে বাকি সন্তানরা আদালতে রিভোক (বাতিল) করার মামলা করতে পারেন।

২. মৃত্যু পরবর্তী উত্তরাধিকার (Intestate Succession):

যদি পিতা সম্পত্তি লিখে না দিয়ে মারা যান, তখন:

• মুসলিমদের ক্ষেত্রে শরীয়ত অনুযায়ী উত্তরাধিকার (মীরাস) বণ্টন হবে।
• প্রতিটি সন্তান তার নির্ধারিত অংশ পাবে (পুত্র ২ ভাগ, কন্যা ১ ভাগ)।

 কিন্তু যদি পিতা মৃত্যুর আগে একজনকে সম্পত্তি দান করে ফেলেন, তাহলে সেই অংশ উত্তরাধিকার হিসেবে গণ্য হবে না, বরং জীবিতাবস্থার দান হিসেবে বিবেচিত হবে।

 ৩. বাকি সন্তানদের করণীয়:

1. দলিল যাচাই করুন:
   • সম্পত্তি দানটি কীভাবে, কবে এবং কী অবস্থায় করা হয়েছে তা যাচাই করুন।
   • দাননামা বৈধভাবে নথিভুক্ত হয়েছে কিনা দেখুন।
2. আইনি পরামর্শ নিন:
   • একজন দক্ষ আইনজীবীর সহায়তা নিন, যিনি উত্তরাধিকার আইন ও সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা দেখেন।
3. চ্যালেঞ্জ করুন (যদি সম্ভব হয়):
   • যদি মনে করেন পিতার উপর প্রভাব খাটিয়ে দান আদায় করা হয়েছে (প্রলোভন, চাপ, প্রতারণা), তাহলে আদালতে মামলা করতে পারেন।
4. আপস বা সালিশি চেষ্টা:
   • অনেক সময় পারিবারিকভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব হয়, যাতে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া এড়ানো যায়।

 উপসংহার:

• পিতা তাঁর জীবদ্দশায় সম্পত্তি যাকে খুশি দিতে পারেন, তবে ন্যায়নীতি অনুযায়ী সকল সন্তানের প্রতি সমান আচরণ করাই উত্তম ও ইসলামসম্মত।
• বঞ্চিত সন্তানেরা আইনি ও সামাজিকভাবে পদক্ষেপ নিতে পারেন, তবে তা নির্ভর করে দানটি কীভাবে ও কোন প্রেক্ষাপটে হয়েছে, তার ওপর।

নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত

কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী