সংবিধানকে “বিচার বিভাগের বৈধতার বাতিঘর” হিসেবে দেখা এক গভীর দৃষ্টিভঙ্গি। নীচে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো যে কীভাবে প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) এবং বিচার বিভাগ সংবিধানের ভিত্তিতে (constitutional) বৈধতা ও স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করে:
১. সংবিধানেই বিচার বিভাগ ও প্রধান বিচারপতির ভিত্তি:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
- বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠা:
- বাংলাদেশের সংবিধান স্পষ্টভাবে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) প্রতিষ্ঠার কথা বলে তা আপিল বিভাগ (Appellate Division) এবং হাইকোর্ট বিভাগ (High Court Division) নিয়ে গঠিত হবে।
- প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ও স্বাধীনতা:
- সংবিধান অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারককে রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগ করতে হবে।
- তবে, তারা বিচারকীয় ফাংশন (judicial functions) সম্পাদন করার সময় স্বাধীন থাকেন। অর্থাৎ, আইনপ্রণয়নকারী বা নির্বাহী শাখার চাপ থেকে বিচারে প্রভাবিত হওয়া উচিত নয়।
- মেয়াদ ও অপসারণ:
- বিচারকদের একটি আনুষ্ঠানিক মেয়াদ রয়েছে সংবিধান নির্দেশ করে যে বিচারক অবসর নেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারে, তবে নির্দিষ্ট এক বয়স পর্যন্ত (উদাহরণস্বরূপ, সংবিধানে ৬৭ বছর পর্যন্ত উল্লেখ আছে)। অপসারণের জন্য সংবিধানেই নিয়ম রয়েছে বিচারককে সরাতে পারার একটি প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা আছে।
২. প্রধান বিচারপতির সাংবিধানিক ভূমিকা এবং গুরুত্ব:
সংবিধানের প্রহরী (Guardian):
- প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টকে অনেকেই “সংবিধানের প্রহরী” হিসেবে দেখে। কারণ আদালত আইনকে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যের দৃষ্টিকোণ থেকে পরীক্ষণ করতে পারে এবং প্রয়োজন হলে আইনকে বাতিল বা সংশোধন করছে।
- বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন:
- প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের স্ব-প্রাতিষ্ঠানিক (institutional) স্বাধীনতা বা স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, বিচার বিভাগকে একটি “পৃথক সচিবালয়” করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে বিচার বিভাগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাহী বিভাগের (executive) নিয়ন্ত্রণ থেকে আরও আলাদা হতে পারে।
- ল’ইয়ার্স ক্লাবের বিশ্লেষণেও বলা হয়েছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব রয়েছে।
- জনগণের প্রবেশাধিকার ও ন্যায়বিচার:
- প্রধান বিচারপতি কয়েকটি বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, সংবিধান যদি কার্যকর ও অর্থবহ হতে চায়, তাহলে ন্যায়বিচারকে সহজলভ্য করতে হবে।
- মামলাজট কমাতে, বিচারক সংখ্যা বাড়াতে এবং বিচার বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তিনি একটি রোডম্যাপ (roadmap) ঘোষণা করেছেন।
- জবাবদিহিতা ও প্রশাসনিক শাসন:
- প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে “প্রধান বিচারপতি ফেলোশিপ” চালুর প্রস্তাব রয়েছে, যা বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে মেধা বিকাশ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে।
- এছাড়া, বিচারক নিয়োগ, প্রশাসনিক সমস্যা ইত্যাদিতে স্বচ্ছতা আনতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে কাজ চলছে।
৩. সংবিধানগত চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা:
- কিছু বিশ্লেষক মনে করেন প্রধান বিচারপতির পজিশন অতীতে “স্বৈরাচারী” ধরনের শক্তি বহন করেছিল, এবং এটি ধারণাটি এখন পুনর্বিবেচনার দাবি আছে।
- বিচার বিভাগ সংস্কার ও বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কমিশন সুপারিশ দিয়েছে, বিশেষ করে “জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন” (seniority violation) প্রতিরোধ করার জন্য যাতে অবসরপ্রাপ্ত বা প্রবীণ বিচারকরা সুবিচার পায়।
- বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ও সমালোচনা রয়েছে।
৪. সংবিধানই বিচার বিভাগের বৈধতার বাতিঘর:
- বৈধতা (Legitimacy): প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট তার ক্ষমতা এবং দায়িত্ব সংবিধান থেকে প্রাপ্ত তাই বিচার বিভাগ তার সিদ্ধান্ত ও রায় দিয়ে সংবিধানিক আদর্শকে জীবন্ত রাখে।
- স্থায়ীত্ব (Stability): বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা হলে এটি রাজনৈতিক চাপ-প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারে এবং সংবিধানে নির্ধারিত কর্মপন্থা দীর্ঘমেয়াদে বজায় রাখা যায়।
- প্রতিরক্ষা (Guardianship): প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগ সংবিধান ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় কাজ করার জন্য প্রহরীর মতো কাজ করে।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply