অনেক দেশে ট্যাক্স রিটার্নে বিদেশে থাকা সম্পদ (বাড়ি, গাড়ি, ব্যাংক ব্যালান্স ইত্যাদি) প্রদর্শন করার বাধ্যবাধকতা আছে। না দেখালে প্রশাসনিক ও ফৌজদারি প্রভাব হতে পারে জরিমানা, সুদ, কোটায় বা বিচার-প্রক্রিয়া, কাইমিং-ব্যাক ট্যাক্স ইত্যাদি। আধুনিক সময়ে আন্তর্জাতিক তথ্য-অদলবদল (CRS, FATCA ইত্যাদি) থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ জানতে পারে।দেশের কোনো করদাতা আয়কর নথিতে বিদেশে থাকা তাঁদের বাড়ি-গাড়িসহ সম্পদের কোনো তথ্য দেননি। দুই বছর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর বিদেশে থাকা সম্পদ আয়কর নথিতে দেখানোর সুযোগ তৈরি করে; কিন্তু এ সুযোগ কেউ নেননি।
আয়কর নথিতে না দেখালেও দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলাদের অনেকের দেশের বাইরে বাড়ি, গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাবর সম্পদ রয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসব সম্পদ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও কর কর্মকর্তারা বিদেশে থাকা সম্পদের বিষয়ে কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
কোন ধরনের তথ্য/সম্পদ দেখাতে হয় (সাধারণ):
- বিদেশে মালিকানাধীন অचल সম্পত্তি (বাড়ি, জমি)
- বিদেশে নিবন্ধিত যানবাহন (গাড়ি, মোটরবাইক)
- বিদেশি ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন
- বিদেশি কোম্পানির শেয়ার/ইকুইটি
- ভাড়া/অন্যান্য আয় যা বিদেশি সম্পত্তি থেকে এসেছে
- বিদেশি ঋণ/মর্টগেজ তথ্য (যদি প্রযোজ্য)
রিপোর্ট করার সময় লাগতে পারে এমন বিবরণ:
- সম্পদের ঠিকানা ও দেশ
- মালিকানা ধরন (পুরো/অংশীদার/ট্রাস্ট/কোম্পানি মাধ্যমে)
- ক্রয়-তারিখ ও ক্রয়মূল্য
- বর্তমান মূল্যায়ন (মার্কেট ভ্যালু) মূল্যায়নের তারিখ উল্লেখ করা
- যদি আয় হয়: বার্ষিক ভাড়া, খরচ, নেট আয়
- গাড়ির ক্ষেত্রে: রেজিস্ট্রেশন নম্বর, মডেল, ক্রয়-তারিখ/মূল্য
- সংযুক্ত কাগজপত্র: বিক্রয় দস্তাবেজ, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, কর প্রদানের রিসিট (যদি বিদেশে কর দেয়া হয়ে থাকে)
কর্তৃপক্ষ কিভাবে জানতে পারে:
- আন্তর্জাতিক তথ্য-অদলবদল: CRS (Common Reporting Standard), FATCA বিদেশি ব্যাংক/ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট করে এবং তথ্য আদানপ্রদান হয়
- বিদেশি সরকারের রেকর্ড থেকে (উদাহরণ: রিয়েল এস্টেট রেজিস্ট্রি, গাড়ি রেজিস্ট্রি)
- ব্যাংক ট্রান্সফার/লেহায প্রাপ্তি
- ভিন্ন সূত্র থেকে অনলাইন/অফলাইন ডেটা মিলানো
ঝুঁকি / শাস্তি (সাধারণ):
- অতিরিক্ত ট্যাক্স (অপরিশোধিত ট্যাক্স+সুদের সঙ্গে)
- অনুশোচনার রিটার্ন/ফাইলকৃত ভুল ঠিক করার দরকার হলে অতীত রিটার্ন সংশোধন
- জরিমানা ও ইউজার-লেভেল PENALTIES (দেশভেদে আলাদা)
- গুরুতর ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ইত্যাদি
কী করলে ঝুঁকি কমে (প্র্যাকটিক্যাল স্টেপ–বাই–স্টেপ)
- সব কাগজ জোগাড় করুন
- ক্রয়/বিক্রয় দলিল, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, রেমিট্যান্স রেকর্ড, মেইনটেন্যান্স/কর অর্থপ্রদানের রিসিট ইত্যাদি।
- সম্পদের বর্তমান মূল্য নির্ধারণ করুন
- স্থানীয় রিয়েল এস্টেট ভ্যালুয়েটর অথবা গাড়ির বাজারদর দেখে আনুমানিক বাজারমূল্য নিন (ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট রাখা উত্তম)।
- অতীত রিটার্ন রিভিউ করুন
- কয়েক বছরের আগের রিটার্নে যদি দেশ অনুযায়ী প্রকাশ বাধ্যতামূলক হয়ে থাকে, সেগুলো চেক করে দেখুন কি দেখানো হয়েছিল কিনা।
- সংশোধিত/অপডেটেড রিটার্ন দাখিল করা (voluntary disclosure)
- অনেক দেশে “voluntary disclosure” বা নিজেই সরিয়ে আনা ভুল স্বীকার করার মাধ্যমে কম জরিমানা বা মুচলেকা পেতে পারেন—এটি সময়োপযোগী হতে পারে। (দেশভেদে পলিসি ভিন্ন)
- ট্যাক্স অ্যাডভাইসর/ট্যাক্স অ্যাটর্নি নিন
- আন্তর্জাতিক ট্যাক্স/রিলাইমেন্ট কেস হলে অভিজ্ঞ পেশাদার প্রয়োজন। তারা রিস্ক কমানোর কৌশল, ট্যাক্স ট্রিটমেন্ট ও দরকারি আবেদন/লিগ্যাল পেপারও সাজেস্ট করবে।
- প্রয়োজনীয় ট্যাক্স প্রদান ও রিটর্ন আপডেট করুন
- পাওনা ট্যাক্স + সুদ/জরিমানা মিটিয়ে নিন এবং ভবিষ্যতে সম্প্রতি রুল অনুযায়ী সঠিকভাবে রিপোর্ট করবেন।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply