কর রেয়াত হলো এমন একটি নীতিমালা, যার মাধ্যমে সরকার কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা খাতকে আংশিক বা পূর্ণ করছাড় (tax relief) দেয়। এর উদ্দেশ্য সাধারণত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা সামাজিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করা।
কর রেয়াত বাতিল করার কারণসমূহ:
নিচে প্রধান কারণগুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
1. রাষ্ট্রীয়রাজস্বঘাটতিবাআয়হ্রাস:
কর রেয়াতের কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায়।
রাজস্ব ঘাটতি হলে সরকার উন্নয়ন প্রকল্প, সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামো খাতে পর্যাপ্ত অর্থায়ন করতে পারে না। ফলাফল: সরকারকে বাজেট ঘাটতি পূরণে ঋণ নিতে হয় বা নতুন কর আরোপ করতে হয়।
2. অসাম্যওবৈষম্যসৃষ্টি:
অনেক সময় কর রেয়াত ধনীদের পক্ষে কাজ করে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নয়।
বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান বা প্রভাবশালী গোষ্ঠী রেয়াতের সুবিধা পায়, কিন্তু ছোট ব্যবসা বা সাধারণ নাগরিক পায় না। ফলাফল: কর ব্যবস্থায় ন্যায্যতা নষ্ট হয়।
3. অপব্যবহারওদুর্নীতিবৃদ্ধি:
কিছু প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ভুয়া তথ্য দেখিয়ে কর রেয়াত নেয়।
অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব বা ঘুষের মাধ্যমে রেয়াতের অনুমোদন পাওয়া যায়। ফলাফল: রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ও প্রশাসনিক দুর্নীতি বৃদ্ধি।
4. অকার্যকরবাপুরোনোনীতি:
অনেক কর রেয়াত নীতি পুরোনো অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়।
সময়ের পরিবর্তনে সেই খাতগুলোতে রেয়াতের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেও তা বহাল থাকে।
ফলাফল: অপ্রয়োজনীয়ভাবে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়।
5. বিনিয়োগেপ্রত্যাশিতফলনাপাওয়া:
রেয়াত দেওয়া হয় বিনিয়োগ বা কর্মসংস্থান বৃদ্ধির আশায়।
কিন্তু অনেক সময় প্রতিষ্ঠান রেয়াতের সুবিধা নিয়ে প্রকৃত বিনিয়োগ করে না। ফলাফল: অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হয় না।
6. আন্তর্জাতিকপ্রতিযোগিতাওন্যায্যতা:
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিমালায় কিছু রেয়াত “subsidy” হিসেবে ধরা পড়ে, যা WTO বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলাফল: বৈদেশিক চাপ বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এড়াতে সরকার রেয়াত বাতিল করতে বাধ্য হয়।
7. করব্যবস্থাকেসরলওস্বচ্ছকরা:
কর রেয়াত জটিলতা বাড়ায়; প্রতিটি খাত বা প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা নিয়ম তৈরি করতে হয়। ফলাফল: রেয়াত বাতিল করলে কর কাঠামো সহজ, স্বচ্ছ ও কার্যকর হয়।
Leave a Reply