বাংলাদেশে Income Tax Act, 1984 ও সংশ্লিষ্ট বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী, কিছু সেবায় বা ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন (‘প্রুফ অফ রিটার্ন ফাইলিং’) দাখিলের বাধ্যবাধকতা কমিয়ে আনা হয়েছে বা পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়েছে। নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো-
কী কী ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ (Proof of Return Filing) লাগবে না বা বাধ্য থাকবে না:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
১. সঞ্চয়পত্র / সেভিংস সার্টিফিকেট:
- National Savings Directorate-এর নিয়ম অনুযায়ী, সেভিংস সার্টিফিকেট বা সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে এখন টাকা ১০ লক্ষ পর্যন্ত বিনিয়োগ করলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো লাগবে না।
- অর্থাৎ, ≤ ৳ ১০ লক্ষ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ ছাড় দেওয়া হয়েছে।
- ২. ক্রেডিট কার্ড ইস্যু বা রিনিউ:
- বাজেট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন আর্থিক বছরের (FY2025-26) থেকে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু/রিনিউ-র জন্য রিটার্ন দাখিল প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকবে না
- শুধুই TIN সার্টিফিকেট দেখিয়েই হবে। ট্রেড লাইসেন্স (নতুন) ও অন্যান্য সেবা:
- বাজেট ঘোষণায় বলা হয়েছে, নতুন ট্রেড লাইসেন্স (সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার এলাকায়) নেওয়ার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা নেই।
- আরও কিছু সেবা যেমন: কোঅপারেটিভ সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন, ই-কমার্স লাইসেন্স, তিন-চাকার গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট রিনিউ ইত্যাদিতেও এই ছাড় প্রযোজ্য।
- সার্বিকভাবে, বাজেট ২০২৫-২৬ অনুযায়ী:
- আগের ৪৩ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ প্রয়োজন ছিল; এখন তা কমিয়ে ১২ বা ১৩ ধরনের সেবায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।
-
তবে কিছু শর্ত ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে:
- হলেও, রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ ছাড় দেওয়া মানে (আয়কর আদায় বা রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা) পুরোপুরি নেই এমনটা নয় কিছু ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল এখনও বাধ্য থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১২ সেবার বাইরে যেসব সেবা, সেসব ক্ষেত্রে প্রমাণ লাগতে পারে। সঞ্চয়পত্র ক্ষেত্রে টাকার সীমা নির্ধারিত হয়েছে (≤ ৳ ১০ লক্ষ) এই সীমার উপরে গেলে প্রমাণ দিতে হবে।
- “প্রমাণ দেখাতে হবে না” বলে যে সুবিধা, সেটি শুধুই রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানোর ব্যাপার অর্থাৎ রিটার্ন দাখিল নিজে হয় নাও থাকতে পারে এমন নির্দেশ নেই সব ক্ষেত্রেই।
- নিয়মাবলী প্রয়োগ, সময় ও বিভাগের সার্কুলার অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের প্রাসঙ্গিক নোটিস বা সেকশনের গেজেট পড়াও জরুরি।
সারাংশ:
- এখন থেকে নতুন অনেক ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ লাগবে না যেমন সঞ্চয়পত্র ≤ ৳১০ লক্ষ, নতুন ক্রেডিট কার্ড, নতুন ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি।
- তবে এই ছাড় সীমাবদ্ধ নির্দিষ্ট সেবা ও নির্দিষ্ট শর্তে।
- রিটার্ন দাখিল বা আয়কর আইন অনুযায়ী কর দেওয়া বিষয়টি আলাদা এবং সে দায় হয়তো এখনও অব্যাহত থাকবে।
- যদি আপনি এক-এক ক্ষেত্রে চান (উদাহরণস্বরূপ: ট্রেড লাইসেন্স পুনরায়, লাইসেন্স নবায়ন, ব্যাংক ঋণ নেওয়া ইত্যাদি) প্রযোজ্য কি না চান সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিধান দেখে নিতে ভালো হবে।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply