1. lawyermanik@gmail.com : legalaidbd :
October 10, 2025, 8:40 am

যে পরিমান খরচ হচ্ছে, সে পরিমাণ যোগান হচ্ছে না: এনবিআর চেয়ারম্যান

  • Update Time : Thursday, October 9, 2025
  • 59 Time View

“যে পরিমাণ খরচ, সে পরিমাণ যোগান হচ্ছে না”  এই ধরণের বক্তব্য প্রসঙ্গে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের কিছু মন্তব্য, প্রেক্ষাপট, চ্যালেঞ্জ ও ডেটা বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো।

. প্রেক্ষাপট প্রাসঙ্গিক তথ্য:

নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী

অর্থবছর ২০২৪‑২৫ (FY25)-এ, এনবিআর-এর রাজস্ব সংগ্রহ লক্ষ্য ছিল .৬৩ লক্ষ কোটি (revised target)। জুলাই থেকে মে পর্যন্ত (১১ মাস) এসময় তারা  .২৮ লক্ষ কোটি রাজস্ব সংগ্রহ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার  ৮৩.১০ % মাত্র অর্জন। এর ভিত্তিতে, কমিশন ও কর্মকর্তারা অতিরিক্ত সংগ্রহ করতে চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে জুন মাসে অতিরিক্ত কার্যক্রম ও তদারকির মাধ্যমে।

  • শেষ চূড়ান্ত তথ্য অনুযায়ী, FY25 এ সংগ্রহ ও লক্ষ্যের মধ্যে ৯২,৬২৫ কোটি হাফসালে বা ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে। জুন ২০২৫-এ রাজস্ব সংগ্রহ প্রায় ৪৩,০৯২ কোটি, যা পূর্ব বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ১০,০০০ কোটি কম (প্রায় ১৯ % হ্রাস) ছিল।

 চেয়ারম্যানের মন্তব্য দৃষ্টিভঙ্গি:

চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও অনুষ্ঠানে নিম্নলিখিত মূল কথা দিয়েছেন:

মন্তব্য / মূল বক্তব্যব্যাখ্যা / প্রাসঙ্গিক দিক
অধিক ঋণ করে সমস্যায় পড়তে চাই নাতিনি বলেছেন যে অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে ব্যয় বৃদ্ধি করলে দেশ “গণি মিয়ার” মতো অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে, তাই ব্যয় ও আয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
বাজেট আকার কমিয়ে দেওয়ার আহ্বানপ্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি অর্থনীতির বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে বাজেট আকার সংকুচিত করার এবং সাধারণ জনগণকে কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথা বলেন।
কর ফাঁকি রিটার্ন না দেওয়া প্রতি করোদ্ধর্তায় কঠোরতাযারা আয়কর রিটার্ন জমা দেন না, তাদেরকে নজরদারিতে আনতে ও সচেতন করতে কর্মসূচি গৃহীত হবে।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনুশাসন নির্দেশনা মেনে চলার অভাবচেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন যে, অনেক ক্ষেত্রেই নীতি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মাঠ পর্যায়ে তা মানা হয় না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর ছাড়তিনি বলেছেন, সাধারণ মানুষের ভোগ্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধি রোধে নির্দিষ্ট কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে, কারণ সব ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধির সুযোগ নেই।
রাজস্ব আদায়বাড়বেআশাবাদতিনি বলেছেন, “রাজস্ব আদায় গতবারের তুলনায় বেশি হবে”  তবে আশা ছিল যেভাবে হবে, সেভাবে কিছুটা বাধা পেয়েছে।

 সমস্যার কারণ চ্যালেঞ্জ:

চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা যে কারণগুলোর দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:

  1. নীতি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ঘাটতি:
    মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কখনও নির্দেশনা মানেন না বা সঠিকভাবে প্রয়োগে অনিচ্ছুক হন  যা রাজস্ব সংগ্রহে বিঘ্ন ঘটায়।
  2. কর ফাঁকি অব্যাহতির সুযোগ:
    অনেক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন দায়িত্ব পালন করে না বা কর অব্যাহতির সুযোগ গ্রহণ করে। এই ধরনের ক্ষেত্রে রাজস্ব হারানো যায়।
  3. কর্মীদের ধর্মঘট / কর্মবিধি ভঙ্গ:
    ২০২৫ সালের মে–জুন মাসে এনবিআর কর্মকর্তাদের ধর্মঘট (পেন-ডাউন) রাজস্ব সংগ্রহ সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। এই অবস্থা রাজস্ব অভিযানে বড় বিঘ্ন ঘটিয়েছে।
  4. আর্থিক অর্থনৈতিক মন্দা:
    রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্দা, আমদানি কম হওয়া, বিনিয়োগ কম হওয়া ইত্যাদি  এসব কারণে বাণিজ্য ও কর উপার্জন কমেছে।
  5. লক্ষ্যমাত্রার অবাস্তবতা:
    অনেকেই বলছেন যে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য ধ্রুবক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি, বাণিজ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নির্ধারণ করা হয়নি  ফলে লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
  6. করবিষয়ক কাঠামোগত দুর্বলতা:
    VAT আইন ও তার প্রয়োগে বিকৃতির কারণে কর ব্যবস্থাপনা দুর্বল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চেয়ারম্যান নিজেই।

সম্ভাব্য সুপারিশ কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা:

চেয়ারম্যান ও রাজস্ব বোর্ড যে কিছু পরিকল্পনা ও সুপারিশ করেছেন, সেগুলো নীচে:

  • নির্ধারিত লক্ষ্য টার্গেটারিয়ার প্রয়োগ:
    মাঠ পর্যায়ের কমিশনারেট ও কমিশনার কার্যালয়কে নির্দিষ্ট “টার্গেট” দেওয়া হবে, যেন তারা জানে, এই অঞ্চল থেকে কতটা রাজস্ব আদায় করতে হবে।
  • গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি:
    কর ফাঁকি ও অব্যাহতিসংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানে গোয়েন্দা ও তথ্যভিত্তিক দল সক্রিয় করা হবে।
  • ডিজিটালরণ তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক প্রশাসন:
    রাজস্ব সংগ্রহের রিপোর্টিং ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল পদ্ধতি (যেমন IBAS) ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • ব্যবসায়ী করদাতাদের সহযোগিতা:
    ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির বাধা অপসারণ ও তাদের প্রতি উদার নীতি গ্রহণের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন।
  • কর ছাড় রিবেট নীতি:
    সাধারণ মানুষের বিপরিতে উচ্চ কর ধার করা এড়াতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর ছাড় এবং রিবেট নীতির প্রয়োগ।

সারাংশ:

চেয়ারম্যানের “যে পরিমাণ খরচ, সে পরিমাণ যোগান হচ্ছে না”  এই বক্তব্য মূলত নির্দেশ করে যে:

  • সরকারের ব্যয়ের পরিকল্পনা রাজস্ব আয় ও সংগ্রহের সক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
  • রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে  অর্থাৎ যে পরিমাণ খরচের জন্য অর্থ প্রয়োজন, সেই পরিমানে রাজস্ব যোগান দেয়া যাচ্ছে না।
  • এই ঘাটতির পেছনে রয়েছে নীতি বাস্তবায়ন ঘাটতি, করফাঁকি, কর্মবিধি ব্যাহত হওয়া, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হওয়া ও টার্গেট অবাস্তব নির্ধারণ ইত্যাদি কারণ।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2017 LegalAidBD
Theme Customized By BreakingNews