আইনের চোখে জমির প্রকৃত মালিক হচ্ছেন তিনি, যার নামে দলিল রয়েছে। দলিল মানে হচ্ছে বিক্রয় চুক্তিপত্র বা দলিল রেজিস্ট্রেশন, যার মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর হয়। দলিল ছাড়া কেবল কথাবার্তার ভিত্তিতে মালিকানা দাবি করলে সেটি আইনের চোখে গ্রহণযোগ্য নয়। জমির দলিল, খতিয়ান, নামজারি, ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ সব মিলেই জমির বৈধ মালিকানা প্রমাণিত হয়। কেবল দখলে থাকলে বা বসবাস করলেই জমির মালিক হওয়া যায় না।
বাংলাদেশে জমির প্রকৃত মালিকানা নির্ধারিত হয় দলিল, রেকর্ড (খতিয়ান), এবং দখল এই তিনটির সমন্বয়ে।
১. দলিল (Sale Deed/Transfer Deed):
দলিল হলো সেই আইনি কাগজ যার মাধ্যমে জমি ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর হয়। এটি মালিকানা প্রমাণের একটি প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল। দলিল ছাড়া শুধুমাত্র কথাবার্তা বা মৌখিক চুক্তিতে মালিকানা স্বীকৃত হয় না।
গুরুত্বপূর্ণ:
যে কেউ ভুয়া বা জাল দলিল বানাতে পারে, তাই একে যাচাই করে নিতে হয় অন্যান্য কাগজপত্র দিয়ে।
২. রেকর্ড/খতিয়ান (CS, SA, RS, BS):
রেকর্ড (যেমন: খতিয়ান, পর্চা) সরকার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত দলিল যা জমির মালিকানা, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য দেয়।
৩. দখল (Possession):
দখল বলতে বোঝায় কে বাস্তবে জমি ভোগ করছে বা ব্যবহার করছে।
বাস্তব প্রয়োগে (বাংলাদেশে):
বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত বিরোধ বা মামলার সময় আদালত এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় দেখেন:
বিষয় | ভূমিকা |
দলিল | মালিকানা হস্তান্তরের প্রমাণ |
রেকর্ড | সরকারি খতিয়ানে কার নাম আছে |
দখল | কে জমি ব্যবহার করছে, বাস্তব নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা |
তিনটিই মিললে মালিকানা শক্তিশালী হয়।
আদালতের অবস্থান:
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত একাধিক মামলায় বলেছেন-
“যদি কারও বৈধ দলিল থাকে, অথচ সে জমি দখলে না থাকে, তাহলে শুধু দখলের ভিত্তিতে অন্য কেউ মালিক হতে পারে না।“
Leave a Reply