বেদখল জমির দখল ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট আইনগত প্রক্রিয়া রয়েছে। আপনি যদি বৈধ মালিক হন এবং জমিটি অন্য কেউ জোরপূর্বক বা অবৈধভাবে দখল করে থাকে, তাহলে আপনি আইন অনুযায়ী দখল ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা নিতে পারেন। নিচে বেদখল জমির দখল ফেরত পাওয়ার পুরো আইনগত প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে দেওয়া হলো:
ধাপ ১ : জমির মালিকানা যাচাই ও দলিলপত্র প্রস্তুত রাখা:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে:
আপনি সেই জমির বৈধ মালিক কি না
জমির হিস্যা খতিয়ান , রেজিস্ট্রি দলিল , জারিপ খতিয়ান (RS/BS) , দখলের প্রমাণ (দশ বছরের ট্যাক্স রশিদ, গাছপালা, ঘরবাড়ি ইত্যাদি) প্রস্তুত রাখুন।
ধাপ ২ : শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা:
প্রথমে চেষ্টা করুন:
স্থানীয়ভাবে সালিশি বা আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানো যায় কি না।
প্রয়োজনে স্থানীয় চেয়ারম্যান বা ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতা নিন।
ধাপ ৩ : থানায় সাধারণ ডায়েরি ( জিডি ) করা:
যদি জোরপূর্বক দখল করে থাকে:
নিকটস্থ থানায় জমি বেদখলের অভিযোগে একটি জিডি করুন ।
এটি ভবিষ্যতের আইনি পদক্ষেপে প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
ধাপ ৪ : সহকারী কমিশনার ( ভূমি ) বা AC (Land) বরাবর অভিযোগ:
আপনি চাইলে ভূমি অফিসে আবেদন করে দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে পারেন।
লিখিত আবেদন করুন AC (Land) বরাবর
দলিল, খতিয়ান, ট্যাক্স রশিদ, দখলের প্রমাণ সংযুক্ত করুন
তিনি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন
ধাপ ৫ : দেওয়ানি মামলা (Civil Suit for Recovery of Possession):
যদি দখলকারী জায়গা ছাড়তে না চায়:
আপনি “Possession Recovery Suit” ফাইল করতে পারবেন
আদালতে “Title Suit with Permanent Injunction and Recovery of Possession” দাখিল করতে হয়
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র :
দলিল
খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ
ট্যাক্স রশিদ
দখল সংক্রান্ত প্রমাণ
জিডি কপি (যদি থাকে)
আদালতের আদেশে পুলিশি সহায়তায় দখল উদ্ধার করা যায়।
ধাপ ৬ : অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (Temporary Injunction):
আদালতে মামলা করার সময় “Temporary Injunction” চাইলে,
বেদখলকারীকে জমিতে কোনো নির্মাণ বা রূপান্তর করতে বাধা দেওয়া যাবে
সম্ভাব্য সময়সীমা ( যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করেন ):
যদি কাগজপত্র পরিষ্কার হয় এবং মামলা ঠিকভাবে করা হয়,
তাহলে ৩-৬ মাসের মধ্যে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও প্রাথমিক আদেশ পাওয়া সম্ভব।
তবে পুরো দখল ফেরতের চূড়ান্ত রায় পেতে ৬ মাস থেকে ১ – ২ বছরও লাগতে পারে , যদি প্রতিপক্ষ আপত্তি দেয়।
আইনজীবী নিয়োগ:
এই প্রক্রিয়ায় একজন অভিজ্ঞ দেওয়ানি ( সিভিল ) আইনজীবী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
সঠিক খসড়া তৈরি, প্রমাণ উপস্থাপন, আদালতে উপস্থাপন ইত্যাদিতে সহায়তা পাবেন
অতিরিক্ত পরামর্শ :
জমির খাজনা নিয়মিত দিন
জমি ফাঁকা না রাখার চেষ্টা করুন (চাষাবাদ, বেড়া, গাছপালা লাগান)
জমিতে নামফলক বা মালিকানা বোর্ড দিন
দলিল ও রেকর্ড আপডেট রাখুন
সংক্ষেপে :
ধাপ কাজ ১ মালিকানা যাচাই ও কাগজপত্র প্রস্তুত ২ শান্তিপূর্ণ সমাধান চেষ্টা ৩ থানায় জিডি ৪ AC (Land) বরাবর অভিযোগ ৫ দেওয়ানি আদালতে মামলা (Possession Suit) ৬ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা ৭ আদালতের নির্দেশে পুলিশি সহায়তায় দখল উদ্ধার
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply