প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে উল্লেখিত “ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা রক্ষায় মুহাম্মদ (সা.) অনন্য আদর্শ” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলে দেখা যায়: বাণীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। এই দিন মানবতার মুক্তিদাতা সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়সহ শান্তিকামী সব মানুষের কাছে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের ধর্মীয় ও পার্থিব উভয় জীবনে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ও জীবনাদর্শ অনুসরণীয়। মহানবী ছিলেন মহানুভবতা, সহনশীলতা, সততা, নিষ্ঠাসহ নানা মানবিক গুণে গুণান্বিত একজন মহামানব, মানবজাতির পথপ্রদর্শক। মহানবী তার জীবনে এমন বহু দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যেখানে ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা, সাহসিকতা এবং নৈতিক দৃঢ়তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, বিচারকার্য পরিচালনায় কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা, সম্পদ কিংবা ক্ষমতার প্রভাব বিবেচ্য হবে না; বরং সবার জন্য একই আইন এবং একই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তাই আইনাঙ্গনের সব সদস্যের জন্য ন্যায়বিচারের এই আদর্শকে ধারণ করা কেবল পেশাগত দায়িত্ব নয়, বরং একটি নৈতিক অঙ্গীকার।
১. ন্যায়বিচারের প্রতীক মুহাম্মদ (সা.):
মুহাম্মদ (সা.) কে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক হিসেবে দেখা হয়। তাঁর জীবন ছিল ন্যায়বিচারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কোনো অবস্থাতেই তিনি অবিচার করেননি, সবসময় সবার প্রতি সমানভাবে ন্যায় করতেন, ব্যক্তিগত দোষ বা সামাজিক মর্যাদা বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে দেয়নি।
২. মানবিক মর্যাদা ও দয়া:
মুহাম্মদ (সা.) শুধু বিচারকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানবতার পক্ষে একজন মহান নেতা। তিনি কখনোই অপরাধীকে শাস্তি প্রদানে অতিরিক্ত নিষ্ঠুরতা দেখাতেন না, বরং তাদের সংশোধনের সুযোগ দিয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতেন। মানুষের মর্যাদা রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন।
৩. অস্পষ্টতায় ন্যায়বিচার:
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মুহাম্মদ (সা.) এর ন্যায়বিচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল সন্দেহের সুযোগ দেওয়া। সন্দেহ থাকলে অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া, কারণ এটা অন্যায় হতে পারে। তাই তিনি সব সময় ন্যায়বিচারে সতর্ক এবং সুবিচার নিশ্চিত করতে চেষ্টা করতেন।
৪. সামাজিক ন্যায় ও সমতা:
মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সমাজের সকল স্তরের মানুষের ন্যায়পরায়ণ নেতা। তিনি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে বিচার করেছেন। গরীব ও দুর্বলদের প্রতি বিশেষ দয়া ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
৫. প্রাসঙ্গিকতা আজকের সমাজে:
প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী, আজকের সমাজে মুহাম্মদ (সা.) এর ন্যায়বিচারের আদর্শ আমাদের জন্য এক অনন্য দিকনির্দেশনা। বিচার ব্যবস্থায় মানবিকতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা তাঁর জীবনী থেকে শিক্ষা নিতে পারি।
Leave a Reply