বাংলাদেশে ২০২৫‑২৬ অর্থবছরে প্রথম ১০ দিনে অনলাইনে এক লাখের কাছাকাছি করদাতা (প্রায় ৯৬,৯৪৫ জন) ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন; চলতি বছরের অনলাইনে জমা দেওয়ার হারের তুলনায় এটি প্রায় পাঁচগুণ বেশি। নিচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো কীভাবে এই দ্রুত প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে, এবং আপনি কীভাবে দ্রুত অনলাইনে রিটার্ন দিতে পারবেন বাংলাদেশে:
কেন এত দ্রুত বেড়েছে? কীভাবে এটি সম্ভব হয়েছে?
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
১. অনলাইনে রিটার্ন দায়বদ্ধতা করা হয়েছে বাধ্যতামূলক:
3 আগস্ট ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) একটি বিশেষ নির্দেশ জারি করে, যেখানে সকল ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয় (কয়েকটি ছাড়সহ)—যেমন: বয়স ৬৫ বা তার বেশি, শারীরিক অক্ষমতা, প্রবাসী বাংলাদেশি, মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি। পরবর্তীতে ১১ আগস্ট নির্দেশনায় বিদেশী নাগরিকদেরও (যারা বাংলাদেশে কাজ করছেন) এই বাধ্যতামূলকতার বাইরে রাখেন।
২. নতুন ও উন্নত ই-ফাইলিং প্ল্যাটফর্ম চালু করা:
4 আগস্ট ২০২৫ তারিখে ফাইন্যান্স অ্যাডভাইজার ডঃ সালেহউদ্দিন আহমেদ ই-রিটার্ন সিস্টেম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
৩. ব্যবহার সহজতর ও স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে:
করদাতারা বাসা থেকেই ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, bKash, Rocket, Nagad ইত্যাদি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কর দিতে পারছেন।
রিটার্ন জমা দেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে acknowledgment slip ও income tax certificate প্রিন্ট করা যাচ্ছে।
৪. সহযোগিতা ও সহায়তা ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে:
NBR একটি কল সেন্টার চালু করেছে (09643‑717171), যেখানে করদাতারা ফোনে সহায়তা পেতে পারেন।
এছাড়াও, etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটে “e-Tax Service” এর মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ বা প্রশ্ন করতে পারছেন।
৫. সুবিধাজনক বিকল্প পদ্ধতি রাখা হয়েছে:
যারা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বা ফাইল করতে পারছেন না তাদের জন্য ৩১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে স্থানীয় Additional বা Joint Commissioner-এর অনুমতি নিয়ে পেপারভিত্তিক রিটার্ন জমা দিতে সুযোগ রাখা হয়েছে।
নিচে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেওয়া হলো:
NBR এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: etaxnbr.gov.bd – এখানেই আপনি রিটার্ন ফাইল এবং কর পরিশোধ করতে পারবেন।
ব্যক্তিগত তথ্য প্রস্তুত রাখুন: প্রয়োজন হবে: TIN (Taxpayer Identification Number), বায়োমেট্রিক SIM (যদি registration সহায়তা করে or বিআইওমেট্রিক), ব্যাংক বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্ট।
ই-রিটার্ন প্ল্যাটফর্মে লগইন ও রিটার্ন ফরম পূরণ করুন: আপনার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে ইনপুট করুন।
অনলাইনে কর পরিশোধ করুন: আপনি আমাদের উল্লেখিত যেকোনো সুবিধাজনক মাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন।
নথি ডাউনলোড করুন: রিটার্ন সাবমিশনের পর acknowledgment slip এবং income tax certificate সঙ্গে সঙ্গে ডাউনলোড/প্রিন্ট করে রাখুন।
কোনো সমস্যা হলে সহায়তা নিন:
ফোন: 09643‑717171
অথবা ওয়েবপোর্টালের e‑Tax Service-এর মাধ্যমে লিখিত প্রশ্ন বা অভিযোগ জমা দিন।
যদি অনলাইন ফাইল না পারেন: উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করে নির্বাচনকৃত অফিসারদের কাছে আবেদন করুন; অনুমতি পেলে পেপারভিত্তিক রিটার্ন বাবদ October 31, 2025 তারিখ পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।
সারসংক্ষেপ:
এই বছর শুধুমাত্র প্রথম ১০ দিনে প্রায় ৯৭ হাজার করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি। এটি সম্ভব হয়েছে বাধ্যতামূলক অনলাইন ফাইলিং, উন্নত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সহজ-সুবিধা প্রদান, এবং করদাতাদের সফল ও স্বচ্ছতার সাথে সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে।
আপনার কোন নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে যেমন: “কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন?” কিংবা “ফি কত?”, “তথ্য কোথায় পাবেন?” ইত্যাদি তাহলে নির্দ্বিধায় জানাতে পারেন, আমি আরও সহজভাবে গাইড করব।
Leave a Reply