1. lawyermanik@gmail.com : legalaidbd :
September 15, 2025, 11:02 am

সবার আগে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগে সংস্কার প্রয়োজন: আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

  • Update Time : Sunday, July 27, 2025
  • 137 Time View

অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের একজন বিশিষ্ট শিক্ষক এবং সমাজ-রাজনীতি বিষয়ে স্পষ্টভাষী বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রায়শই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে সরব হয়ে থাকেন। তার “সবার আগে নির্বাহী, আইন বিচার বিভাগে সংস্কার প্রয়োজন” এই বক্তব্যটি বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রীয় বাস্তবতা ও কাঠামোগত সংকটের গভীরে আলো ফেলে।

 বক্তব্যের প্রেক্ষাপট:

নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী

বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে নানা সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষক ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা। একদিকে নির্বাহী বিভাগের স্বেচ্ছাচারিতা, অন্যদিকে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ও আইন বিভাগের দলীয় নিয়ন্ত্রণ এসব মিলিয়ে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এই প্রেক্ষাপটে অধ্যাপক আসিফ নজরুল মনে করেন:

রাজনৈতিক সংস্কার বা নির্বাচনপদ্ধতি সংশোধনের আগে রাষ্ট্রের তিনটি মূল অঙ্গ নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ সংস্কার করা জরুরি।

নির্বাহী বিভাগে সংস্কারের প্রয়োজন:

নির্বাহী বিভাগ সরকারের বাস্তব প্রশাসনিক কাঠামো, যেটি রাষ্ট্র পরিচালনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

সমস্যাসমূহ:

  • দলীয়করণ: প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
  • দুর্নীতি ও অপশাসন: প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জবাবদিহিহীনতা।
  • জনস্বার্থ উপেক্ষা: প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে জনমতের প্রতিফলন খুব কম দেখা যায়।

সংস্কারের পথ:

  • স্বাধীন ও পেশাদার প্রশাসন গঠন
  • ACR (Annual Confidential Report)-এর পরিবর্তে কার্যনির্ভর মূল্যায়ন ব্যবস্থা
  • জনঅংশগ্রহণ ও তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার প্রবর্তন

আইন বিভাগ (সংসদ/লেজিসলেটিভ) সংস্কার:

আইন বিভাগ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ, যার কাজ জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী আইন প্রণয়ন করা।

সমস্যাসমূহ:

  • একদলীয় সংসদীয় বাস্তবতা: কার্যত কার্যকর বিরোধী দল নেই; ফলে সংসদে বিতর্কহীনভাবে আইন পাস হয়।
  • জবাবদিহির অভাব: সংসদীয় কমিটিগুলো কার্যকর নয়।
  • জনমতের প্রতিফলন নেই: নাগরিক অংশগ্রহণ ও পরামর্শ ছাড়াই আইন পাস হয়।

সংস্কারের পথ:

  • সংসদীয় কমিটিগুলো শক্তিশালী ও স্বাধীন করা
  • Public Hearing ও Stakeholder Consultation বাধ্যতামূলক করা
  • দলীয় হুইপের বাইরে স্বাধীন ভোটাধিকার পুনর্বহাল

 বিচার বিভাগের সংস্কার:

একটি সুশাসিত রাষ্ট্রে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দক্ষ হতে হয়।

সমস্যাসমূহ:

  • নির্বাহী বিভাগের প্রভাব: বিচারক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে সরকারের প্রভাব।
  • বিচার বিলম্ব: মামলা নিষ্পত্তিতে বছর ধরে সময় লেগে যায়।
  • রাজনৈতিক মামলায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

সংস্কারের পথ:

  • বিচারকদের নিয়োগে স্বচ্ছ ও স্বাধীন Judicial Commission
  • ই-জুডিশিয়ারি ও সময়সীমা নির্ধারণ করে বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা
  • বিচার বিভাগের জন্য আলাদা বাজেট ও প্রশাসনিক কাঠামো গঠন

কেন এই তিন বিভাগেই আগে সংস্কার দরকার?

অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মতে, রাজনৈতিক সংস্কার বা নতুন নির্বাচন ব্যবস্থার চেয়েও গভীর ও স্থায়ী সমাধান দরকার রাষ্ট্রের এই তিনটি স্তম্ভে। কারণ:

  • যদি নির্বাহী বিভাগ দুর্নীতিগ্রস্ত থাকে, তাহলে যে সরকারই আসুক, শাসনব্যবস্থা বদলাবে না।
  • যদি বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
  • যদি আইন বিভাগ জনগণের প্রতিনিধিত্ব না করে, তাহলে আইন হবে শাসকের হাতিয়ার।

এ কারণে তিনি মনে করেন শুধু সরকার বদল নয়, কাঠামোগত সংস্কারই সবচেয়ে জরুরি।

নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2017 LegalAidBD
Theme Customized By BreakingNews