উচ্চ প্রযুক্তির কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করে আয়কর রির্টানে প্রতারণা কী ভাবে হয়!
Update Time :
Tuesday, July 15, 2025
126 Time View
উচ্চ প্রযুক্তির কৃত্রিম মেধা (Artificial Intelligence বা AI) ব্যবহার করে আয়কর রিটার্নে প্রতারণা এখন একটি ক্রমবর্ধমান সাইবার অপরাধের ধরণ। নিচে খুব পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করছি AI ব্যবহারকরেআয়কররিটার্নেপ্রতারণাকীভাবেকরাহয়, তার বিভিন্ন কৌশল, প্রযুক্তি, ও প্রভাবসহ:
AI ব্যবহারকরেআয়কররিটার্নেপ্রতারণারবিস্তারিতপদ্ধতিঃ
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
১. ভুয়াতথ্যওনথিতৈরি (Fake Document Generation)
AI-ভিত্তিক টুল ব্যবহার করে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত জাল দলিল তৈরি করা যায়:
নকলইনভয়েস, স্যালারিস্লিপ, দানপত্র ইত্যাদি।
Generative AI (যেমন ChatGPT, Claude, বা Gemini) দিয়ে ট্যাক্স রিপোর্টে সুনিপুণ ব্যাখ্যা লেখা হয় যেন তা “বৈধ” মনে হয়।
Image AI Tools (যেমন DALL·E বা Midjourney) দিয়ে ব্যাংক স্টেটমেন্টের নকল স্ক্যান কপি তৈরি করা যায়।
লক্ষ্য: কর কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করা যেন অতিরিক্ত রিফান্ড পাওয়া যায় বা কর কমানো যায়।
AI দিয়ে ডার্কওয়েব বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, NID, SSN, ইমেইল, ইত্যাদি) স্ক্র্যাপ করা হয়।
সেই তথ্য ব্যবহার করে ভুয়াকররিটার্নদাখিলকরাহয় কোনো ব্যক্তির নামে।
অতঃপর সেই রিটার্নে ভুয়া তথ্য দিয়ে আয় দেখিয়ে সরকার থেকে রিফান্ডআদায়করাহয়।
লক্ষ্য: অন্যের নামে টাকা ফেরত নিয়ে আসা, যা মূল ব্যক্তি জানতেই পারে না।
৩. বটওঅটোমেশনদিয়েগণহারেপ্রতারণা (Mass Automation Fraud using Bots)
AI দিয়ে প্রোগ্রাম করা বটবাস্ক্রিপ্ট শত শত রিটার্ন জমা দিতে পারে একসাথে।
একাধিক ভুয়া ট্যাক্সপেয়ারের একাউন্ট তৈরি করে অল্প অল্প করে রিফান্ড দাবি করে।
এইসব রিটার্নে থাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি তথ্য — দেখে বোঝাও মুশকিল।
লক্ষ্য: পরিমাণে কম হলেও সংখ্যায় বেশি হওয়ায় বিপুল টাকা চুরি।
৪. Deepfake প্রযুক্তিওভিডিওজালিয়াতি
কর অফিসারদের বিভ্রান্ত করতে বা পরিচয় যাচাইয়ের সময় AI-generated deepfake ভিডিওবাঅডিও ব্যবহার করা হয়।
একজন ব্যক্তির মুখ বা কণ্ঠ নকল করে ভিডিও কলে ভুয়া রিটার্নের পক্ষে কথা বলা।
লক্ষ্য: ট্যাক্স অথরিটির যাচাই পদ্ধতি ফাঁকি দেওয়া।
৫. AI দিয়েদুর্বলতাখুঁজেবেরকরা (Exploiting Tax Software Vulnerabilities)
AI হ্যাকিং টুল দিয়ে ট্যাক্সসফটওয়্যারবাওয়েবসাইটেরনিরাপত্তাদুর্বলতাচিহ্নিত করা হয়।
এরপর সেই দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে:
ট্যাক্স রেকর্ড পরিবর্তন
অন্যের রিটার্ন অ্যাক্সেস
টাকা ট্রান্সফার করা হয় ভুয়া একাউন্টে
লক্ষ্য: সাইবার হামলা করে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
এইপ্রতারণারপ্রভাবকীহতেপারে?
দিক
প্রভাব
সরকারেরওপর
বিপুল রাজস্ব ক্ষতি, বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষতি
সাধারণজনগণ
পরিচয় চুরি, রিফান্ড বিলম্ব বা বাতিল
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
ভুয়া অডিট, সম্মানহানি, আর্থিক জরিমানা
ট্যাক্সঅফিসার/সিস্টেম
হ্যাকিং ও ফৌজদারি মামলা
প্রতিরোধমূলকব্যবস্থা (How to Prevent)
সরকারেরকরণীয়:
AI নির্ভর ফ্রডডিটেকশনসিস্টেম চালু করা
ট্যাক্স ফাইলিংয়ে 2FA বাবায়োমেট্রিকযাচাই যুক্ত করা
রিটার্ন যাচাইয়ের জন্য AI দিয়ে anomaly detection চালু করা
করদাতারকরণীয়:
নিজের তথ্য গোপন রাখা (NID, TIN, ইত্যাদি)
Tax lawyer দ্বারা ট্যাক্স ফাইলিং করা এবং তথ্য গোপন রাখা।
সরকারি ট্যাক্স পোর্টাল ছাড়া অন্য কোথাও তথ্য না দেওয়া
অচেনা ইমেইল বা লিঙ্কে ক্লিক না করা
উপসংহারঃ
AI একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি — ভালো কাজে যেমন এর গুরুত্ব, তেমনি দুর্বৃত্তরা এর অপব্যবহার করে আয়কর প্রতারণার মতো অপরাধ ঘটাতে পারে। তবে সচেতনতা, নিরাপত্তা প্রযুক্তি, এবং কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এই হুমকি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
Leave a Reply