“বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয়” সংক্রান্ত বর্তমান প্রেক্ষাপট, আইন উপদেষ্টার ভূমিকা ও সংশ্লিষ্ট আইনগত / প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাবনা সংক্ষেপে উপস্থাপন করছি:
বর্তমান প্রেক্ষাপট ও উন্নয়ন:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
- হাইকোর্টের নির্দেশ ও সাংবিধানিক পরিবর্তন:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগ সিদ্ধান্ত দেয় বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠনের নির্দেশ, ৩ (তিন) মাসের মধ্যে। একই সঙ্গে, বিচারিক বিভাগের অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনায় সুপ্রিম কোর্টকে পুনরায় অধিক ক্ষমতা দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা পুনর্বহাল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দাবি ও উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের সমর্থন:
প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্ট নেতৃত্ব দিন প্রায়বার এই দাবি করেছেন যে, বিচার বিভাগের কার্যক্ষমতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে আলাদা সচিবালয় অপরিহার্য। বিচার সংস্কার কমিশন কয়েকটি সুপারিশ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম আলাদা বিচার সচিবালয় এবং বিচার বিভাগকে নির্বাহী ও রাজনৈতিক প্রভাব থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থাপনা।
- প্রস্তাবনা ও প্রস্তুতি কাজ:
সুপ্রিম কোর্ট একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, যেখানে একটি আলাদা সচিবালয় গঠনের খসড়া “অর্গানোগ্রাম” ও সংশ্লিষ্ট আইনগঠন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আইন মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলা হয়েছে। তবে, ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত “কোন বড় অগ্রগতি” হয়নি বলে সংবাদ রয়েছে।
- আইনমন্ত্রী ও সরকারের মতভেদ:
অতীতে আইন মন্ত্রী বলেছিলেন, বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় নির্মাণ “সম্ভব নয়” এমন বক্তব্য পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিচার বিভাগ এবং আইন মন্ত্রণালয় একমত পৌঁছেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আলাদা সচিবালয় গঠন হবে।
আইন উপদেষ্টার ভূমিকা ও দায়িত্ব:
“আইন উপদেষ্টা” (Law Adviser) পদটি সাধারণত সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক নীতিমালা, আইন প্রণয়ন, বিধি সংস্কার এবং বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠনের প্রেক্ষাপটে আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব ও কাজের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো হতে পারে:
- নিয়ম ও আইন প্রণয়ন ও সংশোধন:
একটি নতুন আইন বা অর্ডিন্যান্স তৈরি করা (উদাহরণস্বরূপ “সুদৃঢ় বিচার সচিবালয় আইন”) যা সচিবালয়ের কাঠামো, ক্ষমতা, নিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতা নির্ধারণ করবে।
বিদ্যমান আইন (যেমন বিচারিক নিয়োগ আইন, রুলস অব বিজনেস, ডিসিপ্লিন আইন) সংশোধন করা যাতে নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য থাকে।
- ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় কাজ:
সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, অধস্তন আদালত ও অন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করা।
প্রশাসনিক নীতি, নিয়োগ-বদলি নীতিমালা, বদলির নির্দেশিকা, শৃঙ্খলা প্রক্রিয়া প্রণয়ন ও পর্যালোচনায় অংশগ্রহণ।
সচিবালয় গঠনে পদ ও দপ্তর নির্ধারণ, জনবিন্যাস ও বাজেট ব্যাপারে সুপারিশ দেওয়া।
- সাংবিধানিক ও নীতিগত পরামর্শ:
বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন, ক্ষমতার বন্টন ও কর্তৃত্ব সীমা সংক্রান্ত সাংবিধানিক প্রশ্ন উত্থাপন ও বিশ্লেষণ করা।
আদালতের স্বাধীনতা ও আইন শাসন সম্পর্কিত নীতিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নেওয়া।
- কানুন সম্মততা ও অধিকারগত বিশ্লেষণ:
নতুন প্রশাসনিক প্রস্তাব এবং নির্দেশিকা সংক্রান্ত আইনগত ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য আইনি লঙ্ঘন শনাক্ত করা।
এ বিষয়ে জনবিচার, মামলাধারী অধিকার ও গভর্নমেন্ট কর্তৃক সম্পাদিত নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা।
- মুল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ:
সচিবালয় গঠনের অগ্রগতি, কার্যকারিতা ও আইনগত প্রয়োগ পর্যবেক্ষণ করা।
জেলা ও অধস্তন আদালতে এই পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন করা।
আইনগত ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ ও শঙ্কাসমূহ:
- সাংবিধানিক সংশোধন প্রয়োজন:
বর্তমান সংবিধানে বিচার বিভাগের নিয়োগ ও শৃঙ্খলা বিষয় রাষ্ট্রপতির অন্তর্ভুক্ত নিয়ন্ত্রণশক্তি দান করা আছে (যেমন ধারা 116) এই আদর্শ পরিমার্জন বা সংশোধন করা প্রয়োজন হবে।
- স্থানান্তর ও ক্ষমতা পুনর্বণ্টন:
বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয় বিচার বিভাগের প্রশাসনিক কাজ করে থাকে (নিয়োগ, বিপনজি, বাজেট ইত্যাদি) এই ক্ষমতা একটি নতুন সচিবালয়ে স্থানান্তর করার সময় সংস্থাগত প্রস্তুতি ও প্রতিরোধ কাজ জরুরি।
- প্রশাসনিক দক্ষতা ও মানবসম্পদ:
নতুন সচিবালয় পরিচালনার জন্য উপযুক্ত দক্ষ কর্মী এবং সংস্থান প্রয়োজন হবে যাদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও পারফরম্যান্স মূল্যায়ন ইতিমধ্যেই পরিকল্পনায় থাকতে হবে।
- আর্থিক ও বাজেট বিষয়:
নতুন সচিবালয় স্বতন্ত্র বাজেট ও ব্যয়ের দায়িত্ব পাবে এই পরিবর্তন অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলবে এবং বাজেট বরাদ্দ বিষয়ে স্পষ্ট নিয়ম থাকা জরুরি হবে।
- রাজনৈতিক ও নির্বাহী বাধা:
বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক বাধা, নির্বাহী অংশগ্রহণ ও আ ঢঙ্কার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আইন উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্টরা মোকাবিলা করতে হবে।
- প্রয়োগ ও কার্যকারিতা:
শুধু আইন বানিয়ে ঠিক হবে না; নতুন সচিবালয় যেভাবে পরিচালিত হবে, কার্যকর হবে সে দিকেও নজর দিতে হবে সেবা সুবিধা, গুণমান, দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply