বাংলাদেশে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন (ই‑রিটার্ন / e‑Return) দাখিল করার উদ্যোগ অনেক সুবিধা দিয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জ ও ভোগান্তিও রয়েছে। নিচে তার সুফল ও সমস্যাসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরা হলো: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এ আয়কর রিটার্ন এখন পুরোপুরি অনলাইনে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে করে মানুষ খুব সহজে ঘরে বসে মানুষ অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারছে। এতে করে তাদের স্বস্তি ও ভোগান্তিও কমে গেছে। তবে অনলাইনে জমা দিতে গিয়ে অনেকে ঝামেলায় ও পড়েছে। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখের মতে টিআইএনধারী রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় অনেকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে অভ্যস্ত নয়।
অনলাইন রিটার্নের সুবিধা / “স্বস্তি”:
নিচে অনলাইন রিটার্ন প্রক্রিয়ায় যে সমস্যাগুলো সাধারণ ধরা যাচ্ছে, সেগুলো আলোচনা করা হলো:
| সমস্যা | বিস্তারিত | উদাহরণ / কারণ |
| নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট অবকাঠামোর দুর্বলতা | অনেক এলাকায় ইন্টারনেট স্পিড বা স্থিতিশীলতা সমস্যা সৃষ্টি করে রিটার্ন দাখিল করতে সময় লাগে বা লুকিয়ে যায় | কখনও ফর্ম জমা দিতে গেলে “টাইমআউট” হয়ে যায় |
| ব্যবহার–অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে জটিলতা | সিস্টেম, ফরম বা মেনু বোঝা কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে যারা কম প্রযুক্তি–সচেতন | অনেক করদাতা বলেছে “আমি ভুল হয়ে সাবমিট দিয়েছি, এখন পরিবর্তন করতে পারছি না” |
| রেজিস্ট্রেশন / ভেরিফিকেশন সমস্যা | টিআইএন, বায়োমেট্রিক মোবাইল নম্বর ভেরিফায়ার না থাকা ইত্যাদি বাধা হতে পারে | অনেকে বলছেন রেজিস্ট্রেশন বা লগইন করতে পারছেন না |
| সাবমিশন ভুল ও সংশোধন সীমাবদ্ধতা | ভুল তথ্য দিয়ে সাবমিট হলে পরিবর্তন কঠিন ছিল। যদিও এখন সংশোধন সুবিধা চালু হয়েছে, তার নিয়ন্ত্রণ ও সময়সীমা আছে। | |
| করদাতার অজ্ঞতা / প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব | অনেক সাধারণ করদাতা এমন একটি সিস্টেমের সাথে স편ন করছেন না, বিশেষ করে যারা কম কম্পিউটার-দক্ষ | “হঠাৎ করে অনলাইনে দিতে হবে বলল, অনেকেই পারবে না” মত মন্তব্য পাওয়া গেছে |
| সিকিউরিটি ও ডেটা নিরাপত্তা | অনলাইন পেমেন্ট, তথ্য আদানপ্রদান ইত্যাদিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে | অনলাইন পেমেন্ট অ্যাপগুলোর নিরাপত্তা বিষয়ে গবেষণায় দুর্বলতা পাওয়া গেছে |
| সময়ের চাপ ও গড়বড় | শেষ মুহূর্তে করদাতারা একসাথে দাখিল করতে গিয়ে বাগ, সার্ভার লোড ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে | অনেক সেবা বিভাগ বলেছে, মাঠ কর্মীরা সব সমস্যার সমাধান দিতে পারছেন না |
| কাগজপত্র যাচাই চাপ | অনলাইন রিটার্নে সরাসরি কাগজপত্র আপলোড করতে না পারলেও পরে অফিসে যাচাই করা হতে পারে, তাই সব নথি প্রস্তুত রাখতে হবে | বিবিসি বাংলা বলেছে, “কাগজপত্র হাতেই রাখুন, যাচাই করতে বলা হতে পারে” |
| সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া শ্রেণি | অনলাইন বাধ্যতামূলক হলেও প্রবীণ, অক্ষম বা বিদেশে থাকা করদাতারা কাগজি প্রক্রিয়া করতে পারবেন, কিন্তু সেই সুযোগ সবার জানা নাও থাকতে পারে | কিছু শ্রেণির জন্য ছাড় দেওয়া রয়েছে |
সারাংশ:
অনলাইন আয়কর রিটার্নের ধরণ বাংলাদেশে একটি পজিটিভ পদক্ষেপ সময় সাশ্রয়, স্বচ্ছতা, একীকরণ, ভুল সংশোধনের সুযোগ ইত্যাদি সুবিধা দিয়েছে। তবে এই পরিবর্তনের সাথে সঙ্গে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, স্বল্প প্রস্তুতি, তথ্য নিরাপত্তা ও ব্যবহার‑দক্ষতার অভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেবে।
Leave a Reply