প্রথমবার আয়কর (Income Tax) রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা দরকার, যাতে আপনি ভুল না করেন এবং আইন অনুযায়ী সঠিকভাবে রিটার্ন জমা দিতে পারেন। নিচে প্রথমবার আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল বা টিপস বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:
১. ট্যাক্সআইডেন্টিফিকেশননম্বর (TIN) সংগ্রহকরুন:
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
প্রথমবার রিটার্ন জমা দিতে হলে TIN সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক।
অনলাইনে NBR-এর eTIN সিস্টেম থেকে নিজেই ফ্রি–তে e-TIN সংগ্রহ করা যায়।
প্রয়োজন: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), মোবাইল নম্বর, ইমেইল।
২. কোনোআয়কররিটার্নজমাদিতেহচ্ছেকিনানিশ্চিতহন:
প্রত্যেক করযোগ্য নাগরিকের রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও, কেউ কেউ হয়তো বাধ্য নন। সাধারণত যারা রিটার্ন জমা দেবেন:
বার্ষিক আয় পুরুষের জন্য > ৩,৫০,০০০ টাকা
মহিলাদের বা ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য > ৪,০০,০০০ টাকা
গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য > ৪,৫০,০০০ টাকা
যাদের একটি গাড়ি, ক্রেডিট কার্ড, বা নগর এলাকায় ৮০০+ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট আছে
যদি আপনি এসবের কোনোটিও না রাখেন, এবং আয়সীমার নিচে থাকেন, তাহলে আপনি “শূন্য রিটার্ন” (zero return) জমা দিতে পারেন।
৩. সঠিকআয়নির্ধারণকরুন:
রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য আপনার বছরেরমোটআয় নির্ধারণ করতে হবে:
চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে: বেতন, বোনাস, ইনসেনটিভ ইত্যাদি
ব্যবসার ক্ষেত্রে: মোট বিক্রি থেকে খরচ বাদ দিয়ে নিট মুনাফা
ভাড়া থেকে আয়, ব্যাংকের সুদ, ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউব, অনলাইন আয়ের ক্ষেত্রেও রিটার্ন জমা দিতে হয়।
৪. ব্যয়েরবিবরণদিন (Statement of Expenditure):
যারা করযোগ্য আয় করেন, তাদেরকে NBR-এর নির্ধারিত ফর্মে বার্ষিক ব্যয়ের বিবরণ দিতে হয়, যেমন:
বাসা ভাড়া
বাজার খরচ
সন্তানদের পড়াশোনা
চিকিৎসা
গ্যাস-পানি-বিজলি এই খরচের উপর ভিত্তি করেও কিছু ক্ষেত্রে আয় অনুমান করা হয়।
৫. লভ্যকরছাড় (Tax rebate) নিন:
আপনি যদি নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করেন, তাহলে আয়করে ছাড় (rebate) পাওয়া যায়:
জীবন বীমা
Provident Fund (G.P.F./C.P.F.)
সঞ্চয়পত্র
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ
মেডিকেল ইনস্যুরেন্স রিটার্নে এই বিনিয়োগের প্রমাণপত্র সংযুক্ত করলে আপনি কর কম দিতে পারেন।
৬. সঠিকফর্মেরিটার্নপূরণকরুন:
ব্যবসার জন্য: IT-11GA ফর্ম
চাকরিজীবী: IT-11U ফর্ম
শূন্য রিটার্নের জন্য: নির্ধারিত সহজ ফর্ম
এছাড়াও অনলাইনে NBR এর eReturn System থেকে ডিজিটালভাবে পূরণ করা যায়।
৭. ডকুমেন্টসংযুক্তকরুন:
নিম্নোক্ত কাগজপত্র যুক্ত করতে হতে পারে:
TIN সার্টিফিকেট
NID/পাসপোর্ট
ব্যাংক স্টেটমেন্ট
চাকরিজীবীদের জন্য অফিস থেকে বেতন সনদ
বিনিয়োগের প্রমাণ (সঞ্চয়পত্র, বীমা ইত্যাদি)
জমির দলিল বা হোল্ডিং ট্যাক্স (যদি থাকে)
৮. নির্ধারিতসময়েরমধ্যেরিটার্নজমাদিন:
সাধারণত ৩০নভেম্বর তারিখটি আয়কর রিটার্ন জমার শেষসময়।
দেরি করলে জরিমানাওসুদ দিতে হয়।
সময়মতো জমা দিলে NBR থেকে Acknowledgement Receipt ও Tax Certificate পাওয়া যায়, যা পাসপোর্ট, ব্যাংক লোন, ভিসা ইত্যাদির জন্য দরকার হয়।
৯. সাধারণভাবেরিটার্নঅনলাইনেজমাদিন:
ওয়েবসাইট থেকে আপনি অনলাইনেই রিটার্ন জমা দিতে পারেন।
এনবিআরের eReturn সফটওয়্যারে সহজে গাইড করে দেওয়া হয়।
আপনি চাইলে কোন ট্যাক্স অ্যাডভাইজার বা করজ পরামর্শদাতার সাহায্যও নিতে পারেন।
Leave a Reply