জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য বিজনেস’ শীর্ষক সভায় অনলাইন আয়কর রিটার্নের সঙ্গে ব্যাংক হিসাব সংযোগের বিষয়ে করদাতাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই সংযোগের মাধ্যমে করদাতার ব্যক্তিগত ব্যাংক তথ্য এনবিআরের কোনো কর্মকর্তা দেখতে পারবেন না, এবং এটি শুধুমাত্র করদাতার সুবিধার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, করদাতাদের বারবার ব্যাংক হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার ঝামেলা দূর করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ বা করদাতাদের লেনদেনে কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৪ আগস্ট এনবিআর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে করদাতার অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স, সুদের আয় ও উৎসে কর কর্তনের তথ্য রিয়েল-টাইমে অনলাইনে সংযুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, করপোরেট করের হার ধাপে ধাপে কমিয়ে বর্তমানে ২০ শতাংশে নামানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও করপোরেট রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে ব্যবসায়ীরা সহজে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। তিনি জানান, টিআইএনধারীদের নোটিশ দেওয়া হয়রানি নয়, বরং রিটার্ন জমা দিলেই সমস্যার সমাধান হবে। র্যান্ডম ভিত্তিতে অডিট করা হবে এবং কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতি তিনটির মধ্যে অন্তত একটি নতুন ফাইল অডিটে
ভ্যাট প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, প্রয়োজনে ভ্যাট রেট কমিয়ে একক হারে আনা হবে এবং ভ্যাট সংগ্রহে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া, এনবিআর চেয়ারম্যান ২৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে জানিয়েছিলেন যে, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড বা জমা দিতে হবে না; শুধু দলিলের তথ্য দিলেই হবে। তিনি বলেন, সনাতনী পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের আয় প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী জমা দিতে হয়, কিন্তু অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, আগামী জুলাই থেকে সব শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে করদাতাদের জন্য সহজ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, যারা নিয়ম মেনে কর দিচ্ছেন, আগামী বাজেটে তাদের কিছু সুবিধা দেওয়া হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যগুলো করদাতাদের জন্য আশ্বস্তকর, কারণ এতে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা এবং কর দাখিল প্রক্রিয়ার সহজীকরণের বিষয়ে স্পষ্টতা এসেছে।
Leave a Reply