ভ্যাট (VAT) রিফান্ড প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি বিশেষত বাংলাদেশে একটি দীর্ঘদিনের সমস্যার নাম। নিচে সহজ ভাষায় কেন ভ্যাট রিফান্ড পেতে ভোগান্তি হয় এবং কোন কোন ধাপে সমস্যায় পড়তে হয়, তার একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
ভ্যাটরিফান্ডেভোগান্তিরমূলকারণগুলো:
১) জটিলওদীর্ঘপ্রশাসনিকপ্রক্রিয়া:
রিফান্ডের আবেদন করতে বহু ধরনের নথি, হলোফনামা, ক্রয়-বিক্রয় তথ্য, চালান, ব্যাংক স্টেটমেন্টসহ অনেক কাগজ জমা দিতে হয়।
একটি তথ্য ভুল থাকলেও ফাইল পেন্ডিং হয়ে যায়।
অনেক সময় ফাইল একাধিক টেবিল ঘুরে ঘুরে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকে।
২) ইলেকট্রনিকসিস্টেমেরসীমাবদ্ধতা:
ই-ভ্যাট সিস্টেম চালু হলেও, অনেক ডেটা ম্যানুয়ালি যাচাই করতে হয়।
কখনো সিস্টেম সঠিকভাবে ইনভয়েস ম্যাপ করতে পারে না।
আপলোড করা ডকুমেন্ট সিস্টেমে ঠিকমতো দেখা না গেলে পুনরায় জমা দিতে হয়।
৩) অযৌক্তিকযাচাই–বাছাইওবিলম্ব:
যাচাই করতে গিয়ে কর্মকর্তারা অনেক সময় অতিরিক্ত প্রমাণ চান।
অনেক প্রতিষ্ঠানকে অকারণে একাধিকবার পরিদর্শনের সম্মুখীন হতে হয়।
‘ঝুঁকি বিশ্লেষণ’ (Risk-based audit) অনেক সময় স্বচ্ছ নয় যার কারণে রিফান্ডে আরও দেরি হয়।
৪) রাজস্ববিভাগেররক্ষণশীলমনোভাব:
রিফান্ড মানে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা বেরিয়ে যাওয়া তাই সহজে ছাড়তে চায় না।
বিনা কারণে ফাইল আটকে রাখা বা সময়ক্ষেপণ একটি সাধারণ অভিযোগ।
৫) দুর্নীতিওঅনানুষ্ঠানিকচাপ:
রিফান্ডে অনেকে ঘুষ বা “ফ্যাসিলিটেশন ফি” দাবি করার অভিযোগ করে।
ঘুষ না দিলে ফাইল দীর্ঘদিন অমীমাংসিত থাকে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন।
৬) তফসিলভুক্তনয়এমনইনপুটবাভুলচালান:
অনেক প্রতিষ্ঠানের ইনপুট ভ্যাট ‘ডিডাক্টেবল’ হিসেবে গণ্য না হওয়ায় রিফান্ড নাও মেলে।
ভুল BIN, ভুল মাশুল কোড, বা অনিবন্ধিত সরবরাহকারীর চালান থাকলেও রিফান্ড আটকে যায়।
৭) আন্তর্জাতিকমানেররিফান্ডপদ্ধতিরঅভাব:
অনেক দেশে অটোমেটিক বা মাসিক/ত্রৈমাসিক রিফান্ড সিস্টেম আছে,
কিন্তু বাংলাদেশে এখনও বেশিরভাগ প্রক্রিয়া ম্যানুয়াল ও কাগজনির্ভর।
এরপ্রভাবকী?
ব্যবসায়ীর কর্মরত মূলধন (working capital) আটকে যায়।
নতুন বিনিয়োগ ব্যাহত হয়।
রপ্তানিমুখী শিল্প বিশেষত গার্মেন্ট বড়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সরকারের প্রতি আস্থা কমে যায়।
সম্ভাব্যসমাধান:
পুরো রিফান্ড প্রক্রিয়া ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় করা।
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রিফান্ড বাধ্যতামূলক করা।
Leave a Reply