বাংলাদেশের করদাতাদের “ক্ষমতা হারানো” বা খরের মুখে পড়ার পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ দেওয়া হলো অর্থাৎ কেন তারা বর্তমানে কর দেয়ার সক্ষমতা বা ইচ্ছা হারাচ্ছেন, কী কারণ রয়েছে, কী পরিণতি হতে পারে। শত শত কারখানা বন্ধ। অনেক কারখানায় ভাঙচুর করা হয়েছে, দেওয়া হয়েছে আগুন। নেই উৎপাদন। বেকার লাখো শ্রমিক।
হারিয়ে গেছে প্রাণচাঞ্চল্য। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভঙ্গুর দশা। নিয়ন্ত্রণের বাইরে পরিস্থিতি। আসছে না নতুন বিনিয়োগ।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে হাহাকার। চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তারতম্য দেখা গেছে চাহিদা ও ভোগে। ফলে গতি হারিয়েছে অর্থনীতি।
এসবের প্রভাব পড়েছে দেশের রাজস্ব আয়েও। এবার ঠিকমতো কর দিতে পারছেন না করদাতারা। যাঁরা এবার বাধ্যতামূলক আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের শতকরা ৮৮ ভাগই দিয়েছেন ‘শূন্য কর’। মানে এঁরা কোনো কর দিতে পারেননি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
পরিস্থিতি সংক্ষেপে:
- National Board of Revenue (NBR)-র তথ্য অনুসারে, প্রায় ১.০৪ কোটি টি–আই–এন (Taxpayer Identification Number) রয়েছে, কিন্তু গত হিসাববছরে মাত্র ৪৩ লাখ রিটার্ন দোভ্য।
- দেশের কর–জাতীয় আয় (tax-to-GDP রেশিও) গত বছর প্রায় ৬.৬ শতাংশ (২০২৪-২৫ অর্থবছরে) হয়েছে।
- একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় Tk 2,26,236 কোটি কর এড়িয়ে গেছে বাংলাদেশে।
- প্রায় ৭২ % ব্যবসায়ী জানান কর কর্মকর্তাদের অনিয়ম বা ঘুষ/দুর্নীতি দেখতে হয়েছে।
-
- একই সঙ্গে ব্যবসা সংকট, উৎপাদন হ্রাস, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া, বিনিয়োগ কমে যাওয়া এসব কারণে করদাতাদের সক্ষমতা ও ইচ্ছা উভয়ই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
করদাতাদের সক্ষমতা কেন কমছে কারণগুলো:
১. অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যবসায়ে অবস্থা খারাপ:
- কারখানা বন্ধ হচ্ছে, রপ্তানি কমছে যার কারণে করদাতাদের আয় কমছে, ফলে কর দেওয়ার সক্ষমতাও কমছে।
- ব্যবসায় মনোবল কমে গেছে বিনিয়োগ আসছে না, কর্মসংস্থান কমছে।
- ২. তথ্য ও নিয়ম-প্রক্রিয়া জটিল ও করমুহূর্তে এলোমেলো
- অনেককে রিটার্ন দ filed করতে পারছেন না বা দিচ্ছেন না ৬৫ % রুজারকরা রিটার্ন দিচ্ছেন না। কর আইন, নিয়ম ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া জটিল, করদাতারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
- ৩. কর প্রশাসনে দুর্নীতি ও অনিয়ম:
- ব্যবসায়ীরা বলছেন কর কর্মকর্তা ঘুষ বা অনিয়ম করছেন, যা করদাতাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। করসংক্রান্ত কাঠামোতে ভ্রাম্যমানতা ও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
- ৪. কর–চাপ বেশি ও অসমানভাবে পড়ছে
- কর দেওয়ার বোঝা একটু বেশি হয়ে গেছে, বিশেষ করে যারা রোপণযোগ্য আয় কম অথচ কর দিতে পারছেন না বা কর দিচ্ছেন না।
- নতুন কর বা টার্নওভার-কর বাড়ানো হয়েছে যা অনেক ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসার জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।
পরিণতি ও ঝুঁকি:
- করদাতা যদি নিজ নিজ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েন, তাহলে কর সংগ্রহ কমে যাবে, সরকার আয় সংকটে পড়বে। যেমন রেশিও কমে গিয়ে ৬.৬ % হয়েছে, যা ভবিষ্যতে উন্নয়ন খাতে বড় ঝুঁকি।
- করদাতাদের প্রতি চাপ বাড়লে ব্যবসায়িক মনোবল নষ্ট হতে পারে, যা বিনিয়োগ, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সবকিছুর ওপর প্রভাব ফেলবে।
- করদাতা-নির্ভর সরকারের ক্ষেত্রে বাজেট ও উন্নয়ন প্রকল্প ব্যাহত হতে পারে — অর্থাৎ সামাজিক সেবা, অবকাঠামো নির্মাণ ইত্যাদিতে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বিশেষ নজর দেয়ার বিষয়গুলো:
- এমএসএমই (মাইক্রো, স্মল ও মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) ও ব্যক্তিগত করদাতাগণ সবচেয়ে ঝুঁকিতে কারণ তাদের আয় কম, করজটিলতা বেশি।
- কর প্রশাসনে সংস্কার জরুরি যেমন কর আইন সহজ করা, করদাতা-সাপোর্ট বাড়ানো, কর কর্মকর্তা-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করা।
- করদাতা-বেস সম্প্রসারণ জরুরি শুধু যারা এখন কর দিচ্ছেন তাঁদের উপর চাপ না বাড়িয়ে নতুন করদাতা যুক্ত করা দরকার।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply