আয়কর রিটার্নের যাচাই–বাছাই (Scrutiny / Audit / Inquiry) সাধারণত যেসব ১৫টি কারণে করা হয় তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো। অনেক করদাতার আয়কর রিটার্ন নিরীক্ষায় পড়ে যায়। এতে করদাতারা বিপাকে পড়ে যান। নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁদের।
অবশ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর ফাইল আপাতত নিরীক্ষায় ফেলছে না। তবে করদাতার ফাইলের বিষয়ে জানতে চেয়ে নানা ধরনের নোটিশ দিচ্ছে।
আয়কর রিটার্ন অডিটে বা নজরদারিতে পড়ার বেশ কিছু কারণ আছে। সেখান থেকে বাছাই করা ১৫টি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. আয়ের সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয়ের অসামঞ্জস্য:
যদি রিটার্নে দেখানো আয়ের তুলনায় করদাতার ব্যয়, সম্পদ বৃদ্ধি, বিলাসী জীবনযাপন কিংবা বিনিয়োগ অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়, তবে রিটার্ন যাচাই করা হয়।
২. রিটার্নে অসম্পূর্ণ বা অস্পষ্ট তথ্য:
আয়, ব্যয়, সম্পদ, দায় বা উৎসের তথ্য যথাযথভাবে না দিলে বা ত্রুটি থাকলে কর কর্মকর্তা কারণ জানতে চান।
৩. উচ্চমূল্যের লেনদেনের তথ্য:
ব্যাংক, জমি/ফ্ল্যাট নিবন্ধন, গাড়ি কিনা-বেচা, বড় অঙ্কের লেনদেনের তথ্য NBR-এর সিস্টেমে পাওয়া গেলে রিটার্ন যাচাই হয়।
৪. উৎসে কর কর্তন (TDS) ও রিটার্নে দেখানো আয়ের অমিল:
TDS সার্টিফিকেট অনুযায়ী যে আয় পাওয়া গেছে রিটার্নে তা কম দেখালে Scrutiny শুরু হতে পারে।
৫. সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেন:
হঠাৎ বড় অঙ্কের ডিপোজিট, RTGS, নগদ জমা, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স ছাড়া অন্য উৎসের টাকা প্রবেশ করলে ব্যাখ্যা চাইতে পারে।
৬. সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি:
এক বছরে বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, গাড়ি, ব্যবসায় বিনিয়োগ বা অন্য সম্পদে বড় পরিবর্তন হলে কারণ জানতে চাওয়া হয়।
৭. পূর্ববর্তী বছরগুলোর সঙ্গে অস্বাভাবিক পার্থক্য:
গত বছরের তুলনায় আয় বা ব্যয়ে বড় বৃদ্ধি/হ্রাস হলে তদন্ত হতে পারে।
৮. ট্যাক্স রিফান্ড দাবি করা:
কর রিফান্ড চাইলে NBR সাধারণত উৎস ও হিসাব যাচাই করে নেয়।
৯. নির্দিষ্ট খাতে করফাঁকির ঝুঁকি বেশি:
কিছু ব্যবসা বা পেশায় করফাঁকির সম্ভাবনা বেশি মনে হলে তাঁদের রিটার্ন অধিক পরীক্ষা করা হয় (যেমন: ঠিকাদারি, রিয়েল এস্টেট, চিকিৎসা, আইন, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি।
১০. বিদেশ ভ্রমণ, বিদেশি অ্যাকাউন্ট বা বিদেশি আয়:
অনেক বিদেশ ভ্রমণ বা বিদেশে সম্পদ/আয় থাকলে কিন্তু রিটার্নে তা উল্লেখ না করলে যাচাই হতে পারে।
১১. নগদ লেনদেন বেশি হওয়া:
বড় পরিমাণ নগদ উত্তোলন বা জমা হলে সন্দেহ তৈরি হয় এবং ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
১২. রিটার্নে ব্যয় দেখানো অস্বাভাবিক বা অযৌক্তিক:
ব্যবসার ব্যয় হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা অস্বাভাবিক ব্যয় দেখালে তদন্ত হতে পারে।
১৩. রিটার্ন দাখিলে দেরি বা বারবার ভুল তথ্য দেওয়া:
নিয়মিত দেরি হলে অথবা রিটার্ন বারবার সংশোধন করতে হলে বিচারাধীন হতে পারে।
১৪. VAT/Customs ও আয়করের তথ্যের অমিল:
ব্যবসার VAT টার্নওভার, কাস্টমস আমদানি-রপ্তানি তথ্য ও আয়কর রিটার্নে উল্লেখিত টার্নওভার এক না হলে Scrutiny হয়।
১৫. NBR কর্তৃক ঝুঁকিভিত্তিক নির্বাচন (Risk-based selection): NBR-এর আয়কর সফটওয়্যার নির্দিষ্ট ঝুঁকিভিত্তিক সূচকের ওপর (risk indicators) স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু রিটার্ন
Leave a Reply