যৌক্তিক ব্যাখ্যার ভিত্তিতে পেপার রিটার্ন দাখিল” করার বিষয়টি, যা সাম্প্রতিক এনবিআর-নীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে:
এনবিআরের “যৌক্তিক ব্যাখ্যার ভিত্তিতে পেপার রিটার্ন”:
অনলাইন (ই-রিটার্ন) বাধ্যতামূলককরণ:
২০২৫-২৬ করবর্ষে, এনবিআর একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে যাকে এখন “অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক” বলা হচ্ছে।
তবে সব করদাতা এই বাধ্যবাধকতার আওতায় নেই চারটি শ্রেণি করদাতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণ করদাতা
শারীরিকভাবে অসক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (সনদপত্রের ভিত্তিতে)
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা
মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি
এই চার শ্রেণির করদাতা “ইচ্ছানুযায়ী” অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারে।
“যৌক্তিক কারণ” (Reasonable Cause) আবেদন প্রক্রিয়া:
যারা অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক হলেও, তাদের জন্য সমর্থনযোগ্য “যৌক্তিক কারণ” থাকলে কাগজে (পেপার) রিটার্ন জমা করার সুযোগ রয়েছে।
করদাতাকে ৩১ অক্টোবর (প্রথম নির্দেশনায়) পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে যৌক্তিক কারণসহ আবেদন করতে হবে। আবেদন করার সময় “সুনির্দিষ্ট কারণ” (specific reason) দিতে হবে যা তাদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ করেছে।
অনুমোদন দেয়ার ক্ষমতা আছে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারদের কাছে। যদি তারা আবেদন মঞ্জুর করেন, তাহলে করদাতা পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবে।
আবেদন সময় সম্প্রসারণ:
পরবর্তীতে, এনবিআর সেই আবেদনের সময়সীমা কিছুটা বৃদ্ধি করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, “ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন-সংক্রান্ত সমস্যা” থাকলে করদাতা ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত যৌক্তিক কারণসহ আবেদন করতে পারবে।
কাগজপত্র জমা প্রমাণের শর্ত:
যেহেতু পেপার রিটার্ন দাখিল করার অধিকার দেওয়া হচ্ছে “যৌক্তিক কারণের ভিত্তিতে”, করদাতাকে আবেদন করার সময় ব্যাখ্যার সঙ্গে প্রমাণ দেখাতে হতে পারে (যেমন: ই-রিটার্ন সিস্টেমে প্রবেশের সমস্যা, আইটি-সংশ্লিষ্ট ব্যত্যয়, প্রবীণত্ব বা স্বাস্থ্যগত সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি) যদিও সুনির্দিষ্ট “প্রমান কি হবে” নির্দেশে স্পষ্ট সব ক্ষেত্রে না বলা হয়েছে, প্রমাণযোগ্য কারণ থাকা আবশ্যক।
অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার সময় কোনো দলিল বা কাগজপত্র আপলোড করতে হবে না, এখনো এনবিআর ঘোষণা করেছে। তবে করদাতাকে যে দলিলগুলোর ভিত্তিতে রিটার্ন তৈরি করেছেন, সেগুলো নিজের কাছে রাখতে হবে এবং ভবিষ্যতে নিরীক্ষার জন্য প্রমাণ হিসেবে প্রদান করতে সক্ষম হতে হবে।
নিরাপত্তা ও সেবা:
এনবিআর বলেছে যে ই-রিটার্ন সিস্টেম নিরাপদ: “সাইবার আক্রমণের কথা বিবেচনায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
করদাতাদের সহায়তা দিতে, কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক চ্যানেলে ২৪-ঘন্টা সেবা চালু রাখার কথা বলা হয়েছে।
নীতির উদ্দেশ্য:
এই নিয়মের মূল উদ্দেশ্য হলো করসেবাকে ডিজিটাল ও স্বচ্ছ করা।
করদাতাদের হয়রানি কমানো এবং প্রক্রিয়াকে সহজতর করার লক্ষ্যে এই ব্যতিক্রম এবং আবেদন প্রক্রিয়া রাখা হয়েছে।
সমালোচনা ও সীমাবদ্ধতা:
যদিও “যৌক্তিক কারণ” ভিত্তিক আবেদন করা যায়, কিন্তু এটি স্বয়ংসিদ্ধ অনুমতি নয় অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারকে অনুমোদন দিতে হবে, এবং সব আবেদন মঞ্জুর নাও হতে পারে।
অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলককরণের উদ্যোগ অনেকের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হলেও, যারা ডিজিটালে অসুবিধায় তাদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হতে পারে।
প্রমাণ ও ব্যাখ্যার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিয়মে পুরোপুরি বিশ্লেষণ করা হয়নি (সর্ব ক্ষেত্রে কি ধরণের প্রমাণ গ্রহণযোগ্য হবে, তা প্রত্যেক সংবাদমাধ্যমে বিশদভাবে দেখানো হয়নি) তাই করদাতাদের আবেদন করার সময় ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
Leave a Reply