টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত বাণিজ্যের আড়ালে যে বিদেশে টাকা পাচার হয়, তা প্রতিরোধ করতেই এমন উদ্যোগ। দুই প্রক্রিয়ায় টাকা পাচার হয় বলে মনে করে এনবিআর। এগুলো হলো আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং। এসব কারণে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব লোকসান হয় বলে মনে করে এনবিআর।
টাকা পাচার (money laundering) ও অবৈধ অর্থপ্রবাহ সীমিত করার জন্য এনবিআর যদি একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করে, সেটি মূলত: কর-ফাঁকি, কাস্টমস ফ্রড, ট্রেড‑বেসড মানি লন্ডারিং, হawala/undocumented cross‑border transfers, ক্যাশ ক্যারিরিং ও অনিয়মিত এক্সচেঞ্জিং শনাক্ত ও প্রতিরোধ করবে। ইউনিটটি এনবিআর‑এর কাস্টমস, ট্যাক্স ইনভেস্টিগেশন ও ইন্টেলিজেন্স শাখাসহ কাজ করবে এবং ব্যাংক/ফাইনান্সিয়াল ইন্টিটিউশন, বাংলাদেশ ব্যাংক–FIU ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ঘন সমন্বয় থাকবে।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
আইনগত ও নীতিগত ভিত্তি:
- Anti‑Money Laundering Act / Money Laundering Prevention Act (২০১২) সন্দেহভাজন আর্থিক লেনদেন রিপোর্টিং ও ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কার্যক্রম।
- Customs Act শুল্ক/কাস্টমস ইজারা, চালান, ঘোষণা, ও বাজে রপ্তানি/আমদানির দণ্ডপ্রকরণ।
- Income Tax Act/Ordinance আয় আড়াল বা ট্রানজেকশন গোপনের ক্ষেত্রে কর ব্যবস্থা প্রয়োগ।
- Anti‑Corruption laws এবং Anti‑Terrorism Act প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও মামলা চলানো।
ইউনিটের প্রধান উদ্দেশ্য (Objectives):
- দেশে ও দেশের বাইরে থেকে অহেতুক/অবৈধভাবে অর্থের বহির্গমন বা ঘুসণ্ডমূলক লেনদেন শনাক্ত করা।
- কাস্টমস‑ভিত্তিক ট্রেড‑বেসড মানি লন্ডারিং (mis‑invoicing, over/under invoicing) ধরতে ট্যাক্স ও কাস্টমস ডেটা মিলানো।
- অনাকাঙ্ক্ষিত নগদ বহন ও অনলাইন স্ট্রিমিং চ্যানেল তল্লাশি ও নিয়ন্ত্রণ।
- সন্দেহভাজন লেনদেনের ওপর তদন্ত করে কর আদায়, জরিমানা ও ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করা।
- আন্তর্জাতিক তথ্যবিনিময় (MLATs, FIU তফসিল), ব্যাংকিং‑ফরেন্সিক এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
সম্ভাব্য কাঠামো (organizational structure):
- পরিচালক (Director, Special AML Unit) সিনিয়র এনবিআর কর্মকর্তা
- তিনটি প্রধান বিভাগ:
- ডাটা‑অ্যানালিটিকস ও ইন্টেলিজেন্স (Data Analytics & Intelligence) ডেটা মাইনিং, রিস্ক স্কোরিং, ক্রস‑ম্যাচিং
- ইনভেস্টিগেশন ও কেস‑ম্যানেজমেন্ট (Investigations & Case Mgmt) ভাঙ্গন/রেইড, মামলা প্রস্তুতি, evidence handling
- লিগ্যাল, কমপ্লায়েন্স ও কোঅর্ডিনেশন (Legal, Compliance & Liaison) আইনি প্রয়োগ, FIU/পুলিশ/ব্যাংক সহযোগিতা
- সাপোর্ট ইউনিট: Forensics (ফাইনান্সিয়াল/IT), Training & Capacity Building, IT/Tooling, Admin & Finance
- লাইন‑অফিস: জেলাভিত্তিক/বন্দরের কন্ট্রোল রুম বা গার্ডিয়ান অফাইস (high‑risk ports/airports/customs stations)
কী ক্ষমতা ও অ্যাক্সেস থাকা উচিত:
- ডেটা অ্যাক্সেস: কাস্টমস ডিক্লারেশন, ট্যাক্স রিটার্ন, ইমপোর্ট‑এক্সপোর্ট পরিমাপ, ব্যাংকিং‑স্প্যান্ট্রান্স্যাকশন (STRs)। (আইন অনুসারে ডেটা শেয়ারিং মেমোরেন্ডাম প্রয়োজন হতে পারে)।
- জরুরি অনুসন্ধানে কুটন‑রেইড পাওয়ার (court order/প্রযোজ্য আইন অনুসারে)।
- রিস্ক‑ভিত্তিক ট্রান্সঅ্যাকশন ব্লক/হোল্ড করার সুপারিশ (আইনি রুটম্যাপ থাকা দরকার)।
- আন্তর্জাতিক রিকোয়েস্ট ফাইল করার ক্ষমতা (FIU/MLAT চ্যানেল‑এর মাধ্যমে)।
- বস্তুগত প্রমাণ (ফোরেনসিক রিপোর্ট) তৈরি করে মামলার জন্য টিআইপি/এভিডেন্স প্রদান।
কাজের প্রধান ধারা (Processes / SOP):
- সংগ্রহ ও প্রি‑স্ক্রিনিং কাস্টমস ডাটাবেস, ট্যাক্স ডেটা, STR/CTR (currency transaction report) থেকে অটোমেটেড রিস্ক‑স্কোরিং।
- অ্যালার্ম/ইন্টেলিজেন্স জেনারেশন রুল‑বেস ও মেশিন লার্নিং‑ভিত্তিক অ্যালার্ট, হাই‑রিস্ক কেস লিস্ট।
- প্রাথমিক যাচাই (Triage) ২৪–৭৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক যাচাই; নিষ্পত্তি/ইনভেস্টিগেশনে রেফার।
- ইনভেস্টিগেশন ফোরেনসিক অডিট, কাস্টমস রেকর্ড চেক, ব্যাঙ্ক কল রিপোর্ট অনুরোধ, সাক্ষাৎকার।
- অভিযান/অপারেশনাল স্টেপস বক্তৃতা/রেইড/জব্দ (কোর্ট নির্দেশে)।
- কেস ক্লোজিং ও রিপোর্টিং এনবিআর‑এর সিদ্ধান্ত: কর আরোপ, জরিমানা, ফৌজদারি মামলা বা আন্তর্জাতিক রেফার।
- ভিডিও/ডকুমেন্ট রিটেনশন ও প্রাইভেসি কেয়ার ডেটা প্রটেকশন মেছোন; আইনি সীমাবদ্ধতা মেনে চলা।
নির্ভুল আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে NBR তালিকাভুক্ত
কর আইনজীবীর পরামর্শ নিন। মানিক দাস, কর আইনজীবী
Leave a Reply